মোল্লা জসিমউদ্দিন: কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে উঠে এসএসসি সংক্রান্ত মামলা৷ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার ফের আদালতের প্রশ্নের মুখে রাজ্যের মুখ্যসচিব৷ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের মুখ্যসচিবের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী৷ এই মামলায় অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার অনুমোদন নিয়ে রাজ্যের অবস্থান জানানোর জন্য ‘তৃতীয়বার’ সময় দিল ডিভিশন বেঞ্চ৷ আগামী ২৩ এপ্রিলের মধ্যে অনুমোদন নিয়ে নিজের অবস্থান জানাতে হবে মুখ্যসচিবকে, নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি বাগচী৷ নিয়োগ মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ শিক্ষা দফতরের প্রাক্তন একাধিক পদস্থ কর্তা জেলে রয়েছেন৷
শিক্ষা দফতরের বেশ কয়েকজন আধিকারিকের বিরুদ্ধেও বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে৷ এ ব্যাপারে গত শুনানিতে অভিযুক্ত সরকারি কর্মীদের গ্রেফতারির বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তর ডিভিশন বেঞ্চ৷ এদিন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতে রিপোর্ট দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব৷ ‘লোকসভা নির্বাচনের পরে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে অনুমোদন নিয়ে রাজ্যের অবস্থান সিদ্ধান্ত জানান হবে৷’ তা রিপোর্ট দিয়ে জানালেন রাজ্যের মুখ্যসচিব৷ এদিন এই মামলার শুনানি পর্বে বিচারপতি বাগচী রাজ্যের আইনজীবী কে বলেন, ‘নির্বাচনের সঙ্গে বিচারপ্রক্রিয়ায় অনুমোদনের কি সম্পর্ক? পুলিশ কি এফআইআর করা বন্ধ করেছে? তদন্ত বন্ধ আছে? আপনাদের বিলাসিতার জন্য তদন্তকারী সংস্থা বসে থাকবে? মুখ্যসচিবকে ডেকে পাঠাবো? মুখ্যসচিবকে এই সিদ্ধান্ত নিতেই হবে৷ হয়ত সিদ্ধান্তের কারণে কোন রাজনৈতিক দলের কাছে তিনি অপ্রিয় হয়ে যাবেন৷ কিন্ত্ত তার থেকেও অনেক বড় দ্বায়িত্ব তার উপর ন্যস্ত আছে৷
ঐমুখ্যসচিব রাজ্যের আইন দফতরের সঙ্গে কথা বলছেন, কিন্ত্ত তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলছেন না৷ এরকম কেন হবে?’ বিচারপতি আরও বলেন, ‘একজন মুখসচিবের এই নিস্তব্ধতায় আদালতের মনে সন্দেহের উদ্রেক হচ্ছে যে এই অভিযুক্তরা কতটা প্রভাবশালী৷ দেড় বছর ধরে অনুমোদনের অপেক্ষায় বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না৷ তদন্তকারী সংস্থা নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে তো? তদন্তকারী সংস্থা যদি বিচারপ্রক্রিয়া অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করে? তাহলে তো তারা তাদের বক্তব্যের সপক্ষে জোরালো যুক্তি খাড়া করতে পারবে৷ এই ক্ষেত্রে মুখ্যসচিব নিজের দ্বায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন৷ আদালত আশা করে অভিযুক্তরা কোনভাবেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মুখ্যসচিবকে কোনভাবেই প্রভাবিত করতে পারবে না৷ তিনি নিরপেক্ষভাবে নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন৷’
এদিন এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের মুখ্যসচিবের ভূমিকায় ক্ষোভপ্রকাশ বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের৷ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার অনুমোদন নিয়ে রাজ্যের অবস্থান জানানোর জন্য তৃতীয়বার সময় দিল আদালত৷ আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে জানাতে হবে, অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার সিবিআই তদন্তে অনুমতি দেবে কি না৷ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যে আধিকারিকদের নাম জডি়য়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে গেলে রাজ্যের অনুমতি নিতে হবে৷ সেই অনুমতি না পাওয়ায় বিপাকে পডে়ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই৷ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তারা৷ আগামী ২৩ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে৷