ধর্ষকদের গুলি করে মেরে দেওয়া উচিত, বারুইপুরে বললেন অভিনেতা দেব

জয়নগরে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন অভিনেতা দেব। ঘাটালের সাংসদ দেব বারুইপুরে এসে বলেন, ‘ধর্ষকদের গুলি করে মেরে দেওয়া উচিত। এমন একটা ভয় কাজ করা উচিত, যাতে এই অপরাধ কেউ করার কথা না ভাবে।’ যদিও তিনি বলেন, তিনি একজন সাংসদ হিসেবে প্রকাশ্যে গুলি করে মেরে ফেলার কথা বলতে পারেন না। তবে সবাই মিলে যাতে এমন একটা দৃষ্টান্তমুলক পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেই পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে ভয় না থাকলে এই ধরণের ঘটনা আটকানো যাবে না।’

সেজন্য অভিনেতা দেব বলেন, ‘দেশে এমন কোনও আইন বা এমন কোনও কানুন আনা উচিত, যাতে অপরাধীদের মনে ভয় কাজ করে। এই ধরণের লোক যদি ধরা পড়ে এবং তারা যদি সত্যিই অপরাধ করে থাকে বা চিহ্নিত হয়, তাহলে তাদের আমার-আপনার ট্যাক্সের টাকা নষ্ট করে লাভ নেই।’

তৃণমূল সাংসদ দেব আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের গণতন্ত্র যথেষ্ট শক্তিশালী, তা সত্ত্বেও আমরা আমাদের মা-বোনেদের সম্মান রক্ষা করতে পারছি না। আসলে মানুষের মধ্যে ভয় নেই, সেটা থাকলে এই ধরণের ঘটনা ঘটাতে পারতো না। সেজন্য এমন কিছু করতে হবে, এমন কিছু আনতে হবে, যাতে এই মানসিকতার মানুষগুলির ভিতর ভয় কাজ করে। তার জন্য সরকার বলো, প্রশাসন বলো বা কোর্ট বলো সবাইকে এমন কিছু করতে হবে, এমন কিছু শাস্তি দিতে হবে, যাতে অন্য মানুষ অপরাধ করা তো দূরের কথা, ভাবলে ভয় পাই।’


এদিন দেব নিজের ছবির প্রচারে বারুইপুরে আসেন। ছবির অভিনেতাদের সঙ্গে ছিলেন পরিচালক শ্রীজিত মুখোপাধ্যায়ও। আগামী ৮অক্টোবর মঙ্গলবার পঞ্চমীর দিন মুক্তি পাচ্ছে দেব অভিনীত ও প্রযোজিত ‘টেক্কা’। এই ছবির প্রচারেই শনিবার বারুইপুরে শো হাউসে আসেন তিনি। টিকিট কাউন্টার থেকে এই ছবির অগ্রিম টিকিট বিক্রি করেন তাঁরা। সিনেমা হলের মধ্যেই অনুরাগীদের সঙ্গে দেখা করেন এবং কথা বলেন। এমনকি তাঁদের সঙ্গে ছবিও তোলেন টলিউড অভিনেতা।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার দুপুরে টিউশন পড়তে গিয়েছিল চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। পড়া শেষ হওয়ার পর ওই ছাত্রী বাড়িতে ফোন করে জানায়, সে বাড়ি ফিরছে। এর কিছুক্ষণ পর থেকেই তার আর হদিশ মিলছিল না। এরপর গভীর রাতে একটি জলাভূমি থেকে তার দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগও আনা হয়।

কারণ, বালিকাটি নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশে অভিযোগ জানাতে গেলেও তারা অভিযোগ নেয় নি বলে দাবি করেন গ্রামবাসীরা। ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা জয়নগর থানার মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়। উত্তেজিত এলাকাবাসী লাঠি, ঝাঁটা হাতে পুলিশকর্মীদের তাড়া করেন। ভয়ে তারা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশের বিশাল বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ফাঁড়িতে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে এই ঘটনার দুই দিন পরে জয়নগরে মানুষের বিক্ষোভ অব্যাহত। রবিবার কুলতলির গরানকাঠি মোড়ে অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। এছাড়া জয়নগরের মহিষমারি হাটে গ্রামবাসীরা মিছিল করেন। মিছিলের স্লোগান ও প্ল্যাকার্ডে লেখা হয়, ‘প্রতিবাদের এক স্বর, আর জি কর থেকে জয়নগর’। আবার এই ঘটনার জেরে রবিবার বিকেলে জয়নগর থানা ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিয়েছে বজরং দল ও দুর্গা বাহিনী।