আরজি করের প্রতিবাদে যেতেই পুজোর মুখে কাজ গেল রানাঘাট পৌরসভার ২ অস্থায়ী কর্মীর

আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ আন্দোলনে সামিল হয়ে পুজোর মুখে কাজ হারালেন রানাঘাট পুরসভার দুই অস্থায়ী কর্মী। রানাঘাট পুরসভার দুই অস্থায়ী কর্মী, দীপায়ন গোস্বামী এবং দেবব্রত ঘোষ, যারা দুজনেই রানাঘাটের বাসিন্দা, গত আগস্ট মাসের ২৮ তারিখে রাজ্যজুড়ে আরজি কর ঘটনার প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন।

অভিযোগ করা হচ্ছে, পরদিন রানাঘাট পৌরসভায় নিত্যদিনের মতো কাজে যোগ দিতে গেলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। পুজোর আগে কাজ হারিয়ে তারা এখন আর্থিক সংকটে ভুগছেন। তবে এই বিষয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, সাত নম্বর ওয়ার্ডের নিকাশী নালা পরিষ্কারের দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও তারা সে কাজ সঠিকভাবে করেননি। স্থানীয় বাসিন্দারা এ নিয়ে কাউন্সিলর কামনাশিস চট্টোপাধ্যায় এবং পৌর কর্মীদের কাছে অভিযোগ জানান। এরপর কাউন্সিলর ও পৌর কর্মীরা নিজেরাই নিকাশী নালা সংস্কারের কাজ শুরু করেন এবং কাউন্সিলর নিজে ড্রেনে নেমে পরিষ্কার করেন।

কাজ হারানোর বিষয়ে দীপায়ন এবং দেবব্রত বিজেপি বিধায়ক পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। রানাঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”তাঁরা কাজে ফাঁকি দিয়েছেন, তাই তাঁদের বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরাও আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। এটা নিয়ে অযথা রাজনীতি করা হচ্ছে।”


উল্লেখ্য, এ ধরনের আরও একটি ঘটনা ঘটে প্রিন্সেপ স্ট্রিটের সিইএসসি অফিসে। সিইএসসি–র কর্মী শুভজিৎ দত্ত অভিযোগ করেন, আরজিকর ঘটনার প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেওয়ার জন্য তৃণমূল পরিচালিত কর্মচারী ইউনিয়ন গত সোমবার অফিসে গেলে তাঁকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। তবে তৃণমূল পরিচালিত ইউনিয়ন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর শুভজিৎ বউবাজার থানার শরণাপন্ন হন এবং পুলিশ তাঁকে অফিসে পৌঁছে দেয়।

প্রসঙ্গত, ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালে কর্মরত তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকে লাগাতার আন্দোলনে সামিল হয়েছে নাগরিক সমাজ। আরজি কর কাণ্ডের ৪৮ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত আসল দোষীদের শাস্তি দিতে ব্যর্থ প্রশাসন। বিচারের দাবিতে পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে চিকিৎসক, তারকা, শিল্পী সকলেই। কিন্তু প্রতিবাদ আন্দোলনে সামিল হয়ে নিজেদের রুজিরুটি হারাবেন এমনটা হয়তো আশা করেননি রানাঘাট পুরসভার দুই অস্থায়ী কর্মী।