রামপুরহাটের ‘গণহত্যা’ নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে যুদ্ধের ময়দানে নামল বিজেপি। সোমবার উপপ্রধান খুনের পরে সেদিন রাতে পরপর অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে ‘গণদাহ’ আখ্যা দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
অন্যদিকে তৃণমূলের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই ঘটনাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবেই দেখছেন। রামপুরহাটে উপপ্রধান খুন এবং পরপর অগ্নিসংযোগের ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারী সহ গেরুয়া শিবিরের বিধায়করা তুমুল বিক্ষোভ দেখান।
শুভেন্দুবাবু বলেন, গত এক সপ্তাহে রাজ্যে ছাব্বিশ জন খুন হয়েছেন। রামপুরহাটের ঘটনা মধ্যযুগীয় বর্বরতার সামিল। এটা আরেকটা ছোট আঙরিয়ার ঘটনা। এই ঘটনার জন্য পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করলেন তিনি।
উপপ্রধান খুন, অগ্নিসংযোগ ও একাধিক ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি করলেন। এদিন বিধানসভা অধিবেশনের মধ্যেই রামপুরহাটের ঘটনা নিয়ে শাসক সরকারের বিবৃতি দাবি করেন বিজেপি বিধায়করা। দাবি ওঠে আলোচনারও।
স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়কদের ধৈর্য ধরতে বললে, বিজেপি বিধায়করা স্লোগান তুলে ওয়াক আউট করেন। বাইরে এসে তাঁরা রামপুরহাটের ঘটনার জেরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করেন।
রামপুরহাটের ঘটনা নিয়ে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করেন। রাজ্যের ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ দাবি করেন শুভেন্দুবাবু।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, তাঁর দফতর ও রাজ্যপাল জগদীপ ঘনকড়কে ট্যাগ করে শুভেন্দুবাবু টুইট করে এদিন জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা কমিয়ে দেখানোর প্রয়াস শুরু হয়ে গিয়েছে। ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও বিধানসভায় অভিযোগ করেন বিরোধী দলনেতা।
তাঁর সঙ্গে গলা মিলিয়ে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সরব হন উত্তরবঙ্গের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা, শংকর ঘোষ প্রমুখ। বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখানোর পরে সেখান গেরুয়া শিবিরের বিধায়কদের নিয়ে মিছিল করে বেরিয়ে রাজভবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
সেখানে ভিডিও কনফারেন্সে দার্জিলিংয়ে অবস্থানরত রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেন। রাজ্যপালের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের পরে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, রাজ্যপালকে বলেছি, আপনি সাংবিধানিক প্রধান। কেন্দ্রকে বলুন এখানে ব্যবস্থা নিতে।
সংবিধানের ৩৫৬ ধারাও রয়েছে, ৩৫৫ ধারাও রয়েছে। যেভাবে নির্বিচারে শিশু ও মহিলা হত্যা হয়েছে, সেখানে কেন্দ্রের হাতে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বোমা বিস্ফোরণের ক্ষেত্রে এনআইএকেও কাজে লাগাতে পারে কেন্দ্র। এছাড়াও সংখ্যালঘুদের ওপরে আক্রমণ হলে স্পেশাল অ্যাক্টে ব্যবস্থা নিতে পারে কেন্দ্র।