টানা ৬ দিন! ফের সিবিআই জেরার মুখে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ

আরজি কর কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার ফের সিজিও কমপ্লেক্সে সন্দীপ ঘোষ।এদিন সকাল ৯টা ১৫ মিনিট নাগাদ সন্দীপের গাড়ি এসে থামে সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে। হাতে একটা ফাইল নিয়ে থমথমে মুখে সোজা ঢুকে যান সিজিও কমপ্লেক্সের মধ্যে। এদিন লালবাজার থেকেও তলব করা হয়েছে সন্দীপকে।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। শুক্রবার থেকে টানা সিবিআইয়ের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। কখনও ১০ ঘণ্টা, কখনও ১২-১৩ ঘণ্টা সিবিআই দফতরে থাকতে হচ্ছে সন্দীপকে। মঙ্গলবারও তাঁকে ডেকে পাঠায় কেন্দ্রীয় এজেন্সিটি। এই নিয়ে টানা ৬ দিন সিবিআই জেরার মুখোমুখি হলেন সন্দীপ।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা সিজিওএ কমপ্লেক্সে ঢোকেন আরজি করের বিতর্কিত প্রাক্তন অধ্যক্ষ। এর আগে সোমবার সকালেও সিবিআই দফতরে হাজিরা দেন সন্দীপ। বেরোন রাত প্রায় সাড়ে ১১টা নাগাদ। তবে কেন বার বার সন্দীপকে তলব করা হচ্ছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। গত বৃহস্পতিবার তাঁকে প্রথম বার তলব করে সিবিআই।


সেদিন অবশ্য হাজিরা দেননি সন্দীপ। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর আইনজীবী জানিয়েছিলেন, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সন্দীপ ঘোষ। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আবেদনও জানিয়েছিলেন তিনি। এরপর ওই দিনই রাস্তা থেকে সিবিআইয়ের গাড়িতে ওঠেন সন্দীপ। সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। তারপর থেকে প্রতি দিনই তাঁকে তলব করা হয়েছে।

এদিকে সন্দীপ ঘোষের আমলে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সেই সমস্ত অভিযোগের তদন্ত করার জন্য সোমবার সিট গঠন করে কলকাতা পুলিশ। একমাসের মধ্যে রিপোর্ট দেবে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট।

আইজি প্রণব কুমারের নেতৃত্বে চার সদস্যর তদন্ত কমিটি (সিট) গঠন করা হয়েছে। সেই বিশেষ তদন্তকারী দলে প্রণব কুমার ছাড়াও রয়েছেন – ডিআইজি মুর্শিদাবাদ ওয়াকার রাজা, ডিআইজি সিআইডি সোমা দাস মিত্র, ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়।

আরজি কর কাণ্ডের তদন্তভার হাতে পাওয়ার পর থেকে জোরদার তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। শুধু প্রাক্তন অধ্যক্ষই নন, আর জি করের গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি পদমর্যাদার একাধিক কর্মীকে জেরা করেছে সিবিআই। ঘটনার রাতে যারা কর্তব্যরত ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলছে সিবিআই।

তদন্তের স্বার্থে বেশ কিছু পড়ুয়া চিকিৎসককেও ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। তদন্তভার হাতে পাওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকবার আরজি করে গিয়েছে সিবিআই। সোমবার হাসপাতালের সেমিনার রুমে থ্রিডি স্ক্যানিং করে তারা। ঘটনাস্থলে একাধিক পায়ের ছাপ, হাতের ছাপ মিলেছে বলে খবর।

সপ্তাহখানেক আগে আর জি কর হাসপাতালে এক ট্রেনি ডাক্তারকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। হাসপাতালের সেমিনার কক্ষ থেকে ওই ট্রেনি চিকিৎসককে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। হত্যার আগে তাঁকে পাশবিক নির্যাতন ও ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।

সেই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরার সে দোষ কবুলও করে। প্রাথমিকভাবে কলকাতা পুলিশ ঘটনার তদন্ত চালালেও দিন কয়েক আগে ধর্ষণ-খুব কাণ্ডের তদন্তভার সিবিআইকে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।