দুর্গা পুজোকে ঘিরে শহরের বড় বড় পুজো কমিটিগুলাের মধ্যে একটা প্রচ্ছন্ন লড়াই চলে। প্যান্ডেলের ভিড় নিয়েও হিসেব চলে তাদের মধ্যে। সাবেকি ও থিমের লড়াইয়ে রাজনীতিবিদরাও বাদ যান না। কিন্তু করােনার কারণে এবার পুজোর আড়ম্বরে অনেক কাটছাঁট হয়েছে। তার ওপর হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, সব পুজো মন্ডপ কন্টেইনমেন্ট জোন। পুজো মন্ডপ দর্শকশূন্য রাখতে হবে। এবার হাইকোর্টের এই নিদের্শে মন্ডপে প্রবেশ করা নিয়ে দর্শনার্থীদের ওপর বিধি-নিষেধ জারি হয়ে গেল।
এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে টালা পার্ক প্রত্যয়ের শুভাশিস সােম জানান, মাতৃ আরাধনায় কোনও ত্রুটি থাকবে না। মহামান্য আদালতের রায় মাথা পেতে নিলাম। আদালত সুরক্ষা স্বার্থে যা যা নির্দেশ দিয়েছে তা কার্যকর করব।
এদিকে নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের অঞ্জন দাস জানান, আমিও শুনেছি। এখনও সরকারিভাবে কিছু জানি না। যদি আদালত নির্দেশ দিয়ে থাকে তাহলে মেনে চলব। এরই সঙ্গে সুরুচি সঙেঘর স্বরূপ বিশ্বাসের মতে, বিষয়টি শুনেছি। তবে অর্ডারের কপি এখনও পাইনি। কপি হাতে এলেই ক্লাব কমিটির সঙ্গে আলােচনা হবে। এরপর সরকার নিশ্চয় নতুন গাইডলাইন দেবে। তা মেনে চলব।
এদিকে শ্রীভূমি স্পাের্টিং ক্লাবের সুজিত বসুর বক্তব্য, রায়ের কপি এখনও হাতে আসেনি। কোর্টের অর্ডার তাে মানতেই হবে। পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে অনেক পুজো কমিটির অসুবিধে হবে। রায় পুরাে খতিয়ে দেখা হবে। লক্ষ্য করেছি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাংলার সঙ্গে বৈমাত্রেয় সুলভ আচরণ করা হচ্ছে।
মুদিয়ালি ক্লাবের সুমিত সেন বলেন, আদালতের নির্দেশ মেনেই দর্শন করাব। এছাড়া সােশ্যাল মিডিয়ায় আমরা সমস্ত অনুষ্ঠান লাইভ দেখাব। বড়িশা ক্লাবের সুদীপ পােল্লে জানান, এই রায়ের পর সরকার যা নির্দেশ দেবে তা মেনে চলব। অন্যদিকে, চক্রবেড়িয়া পুজো কমিটির সভাপতি ও ভবানীপুর স্বাধীন সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক অসীম বােস জানান, হাইকোর্টের রায় আমদের কাছে দুর্ভাগ্যজনক। এতে মানুষ আঘাত পাবে। তবে এই রায়কে আমরা অমান্য করতে পারি না। কিভাবে কী করা যাবে তা নিয়ে পরে কমিটির সঙ্গে আলােচনা করা হবে।
বাংলার দুর্গাপুজো নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে কলকাতার চিকিৎসক মহলের একাংশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। এ ব্যাপারে হাইকোর্ট জানিয়েছে, বাংলার সব পুজো মন্ডপ দর্শক শূন্য রাখতে হবে। ছােট মন্ডপ হলে তা ৫ মিটার ও বড় মন্ডপ হলে তার ১০ মিটারের মধ্যে কোনও দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবেন না।
এমনকি হাইকোর্টের বিচারপতিরা এটাও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, মন্ডপের শেষ প্রান্ত থেকে ফিতে মেপে ওই বলয় তৈরি করতে হবে। কোনও বড় মন্ডপের বাইরে কোনও গেট তৈরি হলে তা মন্ডপের শেষ প্রান্ত বলে বিবেচিত হবে। সব পুজো মন্ডপকে কন্টেনমেন্ট জোন ঘােষণা করতে হবে। এই নির্দেশ পালিত হচ্ছে কিনা তা লক্ষ্য রাখার জন্য প্রশাসনকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।