কুম্ভকার বা কুমাের একটি পেশা। এই পেশার মানুষ মৃৎশিল্পী- মাটি দিয়ে নানা রকম পাত্র, খেলনা, মূর্তি ইত্যাদি তৈরি করেন যারা। কুম্ভকার শব্দটির অর্থই হল কুম্ভ অর্থাৎ কলসি গড়ে যে শিল্পী। কুমােররা মিলে যে পাড়ায় থাকে তাকে বলে কুমােরপাড়া বা কুমােরটুলি। কুমােররা গােল আকৃতির জিনিস বানাবার জন্যে একটি ঘুরন্ত চাকা ব্যবহার করে। এটাকে চলতি কথায় ‘চাক’ বলে।
অতীতে আমাদের সমাজে মাটির তৈরি বাসন থেকে আরম্ভ করে প্রদীপ ইত্যাদি বিভিন্ন ঘরকন্নার জিনিস ব্যবহৃত হােত। কিন্তু দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে ধাতুর তৈরি বাসনপত্র ব্যবহার হতে শুরু করার পর মাটির জিনিসের কদর ক্রমশ কমতে থাকে।
উদাহরণ স্বরূপ, বর্তমানে আলাের উৎসব দীপাবলিতে মাটির প্রদীপের জায়গা নিয়েছে টুনি বাল্ব অর্থাৎ বিজলি বাতি।
এর ফলে সেই চিরাচরিত মাটির প্রদীপ প্রস্তুতকারী কুমােরদের অবস্থা আজ খুবই শােচনীয়। পাশাপাশি করােনার কারনে সংকটে কুমােররা। গত ৬-৭ মাস ধরে লকডাউনের কারনে বিক্রি একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। একদিকে এই পেশা সংকটে অন্যদিকে করােনা, দুইয়ের মাঝে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে এই পেশা।
দু-চার জন কুমাের বাপ-ঠাকুরদার পুরােনাে পেশা আঁকড়ে পড়ে থাকেলও নবীন কুমাের সমাজ আজ অন্য পেশার দিকে পা বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। দীপাবলি ও শ্যামাপুজোর দিকে তাকিয়ে কিছু কিছু কুমাের প্রদীপ ও মাটির জিনিস তৈরি করে চলেছে। সুদিনের আশায়।