রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ধ্বংসের চিহ্ন। আম্ফানের ক্ষততে এখনও প্রলেপ পড়েনি। তার মধ্যেই রাজ্যের একাধিক জেলায় ফের শুরু হয়েছে ঝড় বৃষ্টি। আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিয়েছিল আগেই। মালদা, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, কোচবিহারে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।
রবিবার বিকেলের আগে থেকেই সেই মত বহু জায়গার আকাশ মেঘে ঢেকে যায়। শুরু হয় ভারি বৃষ্টি। একাধিক জায়গা থেকে বাজ পড়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। আম্ফানের ধ্বংসলীলার পর ফের ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হতেই আতঙ্ক বাড়ছে। ঠিক কবে আম্ফানের ঘা শুকোবে তা জানা নেই। এরই মধ্যে নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের গুজব বঙ্গবাসীর কাছে কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের কাছেও এই গুজবের খবর পৌছেছে। সেকারণে মানুষকে আশ্বস্ত করে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, নতুন করে আগামী দশদিনের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের কোনও আশঙ্কা নেই। তবে আগামী ৭২ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায় অতিভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে কালবৈশাখীর আশঙ্কা কিছুটা কম। তাপপ্রবাহের ইঙ্গিতও নেই।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের নতুন নামের তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি বেড়েছে। ২০০৪ সাল থেকে শুরু হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা আম্ফানেই শেষ হয়ে গিয়েছে। মৌসমভবন যে ১৬৯ টি নামের তালিকা প্রকাশ করেছে, তার প্রথম তিনটি নিসর্গ, গতি ও নিভার। বাংলাদেশ, ভারত ও ইরানের দেওয়া।
আরব সাগরে বা বঙ্গোপসাগরে পরবর্তী ঘূর্ণিঝড় হলে তার নাম হবে নিসর্গ। জুনের শুরুতে আরবে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তার হাত ধরেই কেরালায় আসতে পারে বর্ষা। এদিন ইউটিউবে আপলোড হয়েছে ঝাকে ঝাকে ভিডিও। এইসব ভিডিও শেয়ার হয়েছে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপে। কোনও কোনও সংবাদমাধ্যমও এই সংবাদ অনলাইনে প্রকাশ করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনভাবে লেখা হয়েছে, যাতে করে মানুষ বিশ্বাস করতে বাধ্য। যেমন লেখা রয়েছে, ইসরোর উপগ্রহ থেকে বোঝা গেল ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ তৈরি হয়েছে আরব সাগরে। তারপরে লেখা রয়েছে আম্ফানই শেষ নয়, এরপরই আসছে আর এক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ‘নিসর্গ’। সোশ্যাল মিডিয়ায় এইসব লাইন দেখে বিভ্রান্তি বেড়েছে মানুষের মধ্যে। গত ২৮ এপ্রিল দিল্লির মৌসম ভবন উত্তরভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পরবর্তী ১৬৯ টি ক্রান্তিয় ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মায়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, ইয়েমেন। এই ১৩ টি দেশের প্রত্যেকে ১৩ টি করে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছে। এই ১৩ টি দেশের ইংরেজি নামের আদ্যাক্ষরে ক্রমানুসারে সাজানো হয় এই নামের তালিকা। সবার আগে থাকবে বাংলাদেশের নাম। তারপর ভারতের। এভাবে ক্রমানুযায়ী পরবর্তী যে ঘূর্ণিঝড়টা আসবে তার নাম ‘নিসর্গ’, নাম দিয়েছে বাংলাদেশ। পরের ঝড়টির নামটি ‘গতি’, নাম দিয়েছে ভারত।