নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হয়েছিল বৌবাজারের হস্টেলে যুবককে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় ধৃতদেরকে। এদিন সরকারি আইনজীবীর আবেদনে পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধি করল আদালত। আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত তাঁদের পুলিশি হেফাজতে থাকতে হবে। তবে ধৃতদের মধ্যে যাঁদের পরীক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন, তাঁরা পরীক্ষা দিতে পারবেন বলেও জানিয়েছে আদালত। এদিন সওয়াল-জবাব পর্বে সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, -‘ঘটনার দিন হস্টেলের ভিতরে যুবককে বেধড়ক মারধর করা হয়। ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে রাখা হয়েছিল।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও দরজা খোলা হয়নি। যুবক যাতে পুলিশের সামনে মুখ খুলতে না পারেন, সেই বন্দোবস্ত করেছিল অভিযুক্তরা। যতক্ষণ না তিনি কথা বলার ক্ষমতা হারাচ্ছেন, ততক্ষণ মারধর চালিয়ে যাওয়া হয়। তিনি কথা বলতে পারবেন না, এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর খুলে দেওয়া হয় হস্টেলের দরজা। তারপর পুলিশ ভিতরে ঢোকে’। বৌবাজারের সেই হস্টেলে গিয়েছিল ফরেন্সিক দলও।
এদিন পুলিশ আরও জানিয়েছে, ‘হস্টেলের মেঝে থেকে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজও। যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরাই যুবককে মারধর করেছিল। সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিলেন, যাঁরা এখনও পলাতক। সকলেই অপরাধের সঙ্গে জড়িত। সেদিন কী ঘটেছিল, তার ডিজিটাল প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।’ অপরদিকে ধৃতদের আইনজীবী জানান, ‘ধৃতরা সকলে পড়ুয়া এবং মেধাবী ছাত্র। কেউ কেউ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। এঁরা কেউ মারধরের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন’। আদালতে মামলা চলাকালীন পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করেন কয়েকজন অভিযুক্ত। আদালত তাঁদের সেই অনুমতি দিয়েছে। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত ধৃতদের সকলকে ১০ জুলাই পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে থাকতে বলেছে।
বৌবাজারের হস্টেলে ইরশাদ আলম নামের ৩৭ বছরের যুবককে মোবাইল চোর সন্দেহে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। যুবক বেলগাছিয়ার বাসিন্দা। তিনি চাঁদনি চকের দোকানে কাজ করতেন। অভিযোগ, ঘটনার আগের দিন ওই হস্টেলের একজনের মোবাইল হারিয়ে গিয়েছিল। পরের দিন সকাল থেকে যুবককে হস্টেলের সামনে ঘুরঘুর করতে দেখে সন্দেহ হয় আবাসিকদের। তারপরেই তাঁকে ফুটপাথ থেকে টেনে হিঁচড়ে হস্টেলের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। ভিতরে মারধর করা হয় তাঁকে। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। হাসপাতালে ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনায় মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে মুচিপাড়া থানার পুলিশ। ধৃতেরা সকলে হস্টেলের আবাসিক। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১০ জুলাই বলে জানা গেছে।