উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করল নোয়াপাড়া থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম – জয়শ্রী দাস, শুভজিৎ বিশ্বাস এবং শুক্লা বিশ্বাস। শনিবার সকালে চিলেকোঠায় গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায় সত্যজিৎকে। উদ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোট।

সুইসাইড নোটে নাম থাকা ৪ জনকে জেরা করেছিলেন তদন্তকারীরা। একজনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও বাকি তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। কী কারণে সত্যজিতের মৃত্যু হল, তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না তদন্তকারীরা। তবে এখনও পর্যন্ত আত্মহত্যার তত্ত্বই জোরদার হচ্ছে। তৃণমূলের তরফে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই খুনের পিছনে রাজনৈতিক কারণ নেই।

মঙ্গলবারই সত্যজিতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক এবং জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। তাঁরা জানিয়েছেন, কী কারণে সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু হল, তা খতিয়ে দেখুক পুলিশ। দ্রুত সত্য সামনে নিয়ে আসার দাবিও জানান তাঁরা।


প্রসঙ্গত, শনিবার সকালে বাড়ির চিলেকোঠা থেকে উদ্ধার হয় উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেহ। পাশাপাশি আড়াই পাতার একটি চিঠিও উদ্ধার হয়। এই চিঠিই সুইসাইড নোট বলে অনুমান করেছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। একটি ভিডিও দেখিয়ে সত্যজিৎবাবুকে ব্ল্যাকমেল করা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। চিঠিটি পড়ে এটাই সন্দেহ করছে পুলিশ।

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। শুক্রবার রাতে তিনি বাড়িতে ফেরেন। পরে ফের কিছুক্ষণের জন্য বাড়ির বাইরে যান। শুক্রবার বাড়িতে ফিরে বাড়ির লোকজনের সঙ্গে বিশেষ কথা বলেননি সত্যজিৎবাবু। মোবাইলও বাড়িতেই ছিল বলে জানা গিয়েছে। গভীর রাতে ফের বাড়িতে আসেন সত্যজিৎ। শনিবার সকালে বাড়ির চিলেকোঠা থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া চিঠিতে মোট ৪ জনের নাম পান তদন্তকারী আধিকারিকরা। এরাই ব্ল্যাকমেলের ঘটনায় যুক্ত থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

মৃতের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছিলেন, মোবাইলে ভুয়ো ভিডিও দেখিয়ে উত্তর ব্যারাকপুরের উপ–পুরপ্রধানকে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছিল। সুইসাইড নোটে এবিষয়ে বিস্তারিত লিখেছেন সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃতের ছেলে সার্থক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সুইসাইড নোটে যে চারজনের নাম রয়েছে তাঁদের মধ্যে দুইজনকে পরিবারের সদস্যরা চেনেন। যে ভিডিওটি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে, তা ভুয়ো কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ।