বাংলাদেশের পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেউ পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গি কার্যকলাপ চালাতে পারবে না। এ বিষয়ে যথেষ্ট তৎপর রাজ্য পুলিশ। রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। পাশপাশি তাঁর দাবি, কয়েকদিন আগে ক্যানিং থেকে কাশ্মীরের যে জঙ্গিকে ধরা হয়েছিল তাকে রাজ্য পুলিশই ধরিয়ে দিয়েছে। জঙ্গিদমনে পশ্চিমবঙ্গ ও কলকাতা পুলিশ নিঃশব্দে কাজ করে চলেছে বলে জানিয়েছেন রাজীব কুমার। রাজ্যের মানুষকে পুলিশের উপর ভরসা রাখার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
কয়েকদিন আগে পশ্চিমবঙ্গ ও জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের যৌথ অভিযানে ক্যানিং থেকে এক জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সে কাশ্মীরের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন তেহরিক–উল–মুজাহিদিনের সদস্য বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এ বিষয়ে রাজীব জানান, রাজ্য পুলিশের এসটিএফের দেওয়া তথ্য থেকেই কাশ্মীরের ওই জঙ্গির খোঁজ মিলেছিল। রাজীবের কথায়, ‘কাশ্মীরের জঙ্গিকে দু’দিন ধরে আমরা ট্র্যাক করেছি। ওর গতিবিধি নজরে রেখেছি। তারপর কাশ্মীরের পুলিশকে ডেকেছি। আমরা নিঃশব্দে কাজ করছি। বিশেষত জঙ্গিদের বিষয়ে তদন্ত সম্পর্কে বাইরে বেশি কথা বলা যাবে না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আমরা হাত গুটিয়ে বসে আছি।’
রাজীব কুমার আরও বলেন, ‘যারা সমস্যা তৈরির চেষ্টা করবে, তাদেরই গ্রেপ্তার করা হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক কিছুই ছড়াচ্ছে। কিন্তু আমাদের শান্ত থাকতে হবে। সাধারণ মানুষ যদি কোনও তথ্য পান, আমাদের দিন। রাজ্যে শান্তি বজায় রাখতে সবরকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’
জঙ্গি দমনে রাজ্য পুলিশের রেকর্ড সম্পর্কে মনে করিয়ে দেন ডিজি। তিনি বলেন, ‘জঙ্গিদমনের বিষয়ে আমাদের রেকর্ড অতীতেও ভাল ছিল। এখনও ভাল। আগামী দিনেও আমরা সেই রেকর্ড ধরে রাখার চেষ্টা করব।’ পাশাপাশি এদিন বিএসএফের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন রাজীব। তাঁর দাবি, সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা বিএসএফের কাজে অনেক খামতি আছে। বাংলাদেশের অশান্তির আবহে সে দেশ থেকে অনেকেই রাজ্যে প্রবেশ করেছেন এবং করছেন। অনুপ্রবেশকারীদের রুখতে বিএসএফের তৎপরতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজীব। তাঁর দাবি, বিএসএফের তৎপরতার অভাব থাকলেও অনুপ্রবেশকারীদের রুখতে রাজ্য পুলিশ সক্রিয়। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পুলিশের এই সাফল্যের পিছনে রাজ্যের মানুষের হাত রয়েছে বলে দাবি করেন ডিজি। তাঁর কথায়, ‘জঙ্গিদমনে আমরা সফল, কারণ আমরা মানুষের সহযোগিতা পাই। আমরা যেমন মানুষের জন্য, তেমন মানুষও আমাদের জন্য। সব তথ্য প্রকাশ করতে পারব না, তবে অনেকেই সক্রিয়ভাবে আমাদের সহযোগিতা করেন। আমরা রাজ্যের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।’
ভারতে প্রবেশের ক্ষেত্রে জঙ্গিরা বাংলাকে করিডর হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে বলে বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছিল। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজীব কুমার রাজ্যের অবস্থান সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেন। তাঁর দাবি, পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান এমনই যে বাংলাদেশ থেকে কেউ কাশ্মীর বা ভারতের পশ্চিম অংশে কোথাও যেতে চাইলে রাজ্যের উপর দিয়েই যেতে হবে। এর আর কোনও বিকল্প নেই। পাশাপাশি পাসপোর্ট জাল করে অনুপ্রবেশের বিষয়ে তিনি জানান, আগামী দিনে পুলিশ সুপাররা পাসপোর্ট যাচাইয়ের কাজ খতিয়ে দেখবেন।