• facebook
  • twitter
Monday, 25 November, 2024

ছবি বিশ্বাস মানে বাঙালি সেলুলয়েড জগতে একটা ক্রেজ, মিথ

রথীন কুমার চন্দ ১২ জুলাই ছবি বিশ্বাসের ১২৪ তম জন্মদিবস৷ তাঁর আসল নাম শচীন্দ্রনাথ৷ ১৯০০ সালের ১২ই জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন৷ তিন দশকের অভিনয় জীবনে তিনি বাংলার চলচ্চিত্র জগতকে মোহিত করে রেখেছেন৷ কে ভুলতে পারে ‘কাবুলিওয়ালার’ রহমতকে৷ সেই রহমতকে বাংলার চলচ্চিত্র প্রেমী দর্শক তাঁকে চিরকাল মনের মণিকোঠায় রেখে দেবে৷ কাবুলিওয়ালা আফগানিস্থান থেকে বাস্তবের বুকে নেমে এসেছিল তাঁর অভিনয়ের গুণে৷ বেদনা,

রথীন কুমার চন্দ
১২ জুলাই ছবি বিশ্বাসের ১২৪ তম জন্মদিবস৷ তাঁর আসল নাম শচীন্দ্রনাথ৷ ১৯০০ সালের ১২ই জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন৷ তিন দশকের অভিনয় জীবনে তিনি বাংলার চলচ্চিত্র জগতকে মোহিত করে রেখেছেন৷

কে ভুলতে পারে ‘কাবুলিওয়ালার’ রহমতকে৷ সেই রহমতকে বাংলার চলচ্চিত্র প্রেমী দর্শক তাঁকে চিরকাল মনের মণিকোঠায় রেখে দেবে৷ কাবুলিওয়ালা আফগানিস্থান থেকে বাস্তবের বুকে নেমে এসেছিল তাঁর অভিনয়ের গুণে৷ বেদনা, হাসি, কান্না ভেজানো চরিত্রের রূপায়ণ দক্ষতা এককভাবে কতটা সম্ভব, শুধুমাত্র তাঁর দীপ্ত অভিনয় প্রমাণ করেছিল৷ ছবি বিশ্বাস স্ক্রিনে দাঁড়ানো মানে আবেদন মাখানো অভিনয় ক্ষমতাধারী একজন নিখাদ বাঙালি অভিনেতা, যাঁর অভিনয়ে কোনও ভেজাল ছিল না৷

ছবি বিশ্বাস মানে ধুতি পাঞ্জাবি পরিহিত নিপাট বাঙালি সাজে নায়োকচিত দাপুটে অভিনেতা, পার্শ্ব চরিত্রে বাবা বা অন্য চরিত্রে যার জুরি মেলা ভার৷ দাম্ভিক বাবা বা পিতা বলতে পিতৃতান্ত্রিক সমাজের যে চিত্র ফুটে উঠত, তাঁর চারিত্রিক অভিনয়ের মধ্যে আপাদমস্তক বাঙালি তাই গ্রহণ করত সাদরে৷ ছবি বিশ্বাস মানে তৎকালীন বাঙালি সেলুলয়েড জগতে একটা ক্রেজ, মিথ বলা যেতে পারে৷ ছবি বিশ্বাসের অভিনয় মানে বিপুল হাততালির সমাহার ও প্রযোজক- পরিচালকের দুশ্চিন্তার ভাঁজ নয়, বরং হেলায় বক্স অফিসে হিট হওয়া ছবি প্রস্তুত হওয়া৷

জলসাঘরে তাঁর হাহাকার ও শূন্য দৃষ্টি দর্শকের কাছে আবেদন রাখে মনে রাখার মতো অভিনয় প্রতিভাকে৷ শেষে ঘোড়া ছুটিয়ে সমস্ত শূণ্যতা ভোলার আপামর চেষ্টা চরিত্রকে প্রাণবন্ত করে তোলে৷ জলসাঘরে ছবি বিশ্বাস একাই বক্স অফিসে হিট করানোর প্রতিজ্ঞা নিয়ে নেমে পড়েছিলেন, তেজিয়ান ঘোড়ার মতো৷ একাই তিনি জলসাঘরের ঘ্রাণ দিয়েছেন চিত্রনাট্যের মোড়কে৷ ‘দেবী’ ছবি বিশ্বাসের পিতৃতান্ত্রিক সমাজের চরিত্রকে পরিস্ফুটন করেছে৷ ‘সপ্তপদী’-তে ছবি বিশ্বাসের চরিত্র উত্তম কুমারের অভিনয়ের পাশে সমানে টক্কর দিয়েছে৷ আবেদনে কোনও অংশে কৃষ্ণেন্দুর বাবার চরিত্র নাড়া দিয়েছে চলচ্চিত্রমোদি দর্শকদের৷ সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় দেবী, জলসাঘর, কাঞ্চনজঙ্ঘা’য় অভিনয় করেছেন৷ ১৯৫৯ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি তাঁকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে পুরস্কৃত করেছে৷ এছাড়াও তিনি দাদাঠাকুর, হসপিটাল, গলি থেকে রাজপথ, পরশপাথর, জদুভট্ট-তে সফলতার সঙ্গে অভিনয় করেন৷ ছবি বিশ্বাস তাঁর অভিনয়ের সুবাদে বাংলার চলচ্চিত্র আকাশে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে চিরকাল বিরাজমান থাকবেন তাঁর গুরুগম্ভীর চরিত্রে অভিনয়ের সূত্রে৷