শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছিল, শুক্রবার অবশেষে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ইডির দায়ের করা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অবশেষে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মঞ্জুর করল শীর্ষ আদালত। দীর্ঘ টানাপোড়নের পর অবশেষে একটি মামলায় শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেন তিনি। ২০২২-এর ২৩ জুলাই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে।
সম্প্রতি এই মামলাতেই জামিন পেয়েছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। পার্থের জামিন মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে গত ৪ ডিসেম্বর শেষ হয়ে গিয়েছিল। রায় ঘোষণা স্থগিত রেখেছিলেন বিচারপতিরা। শর্তসাপেক্ষে ১ ফেব্রুয়ারি জামিন পাবেন পার্থ। শীতকালীন ছুটি বা ৩১ ডিসেম্বরের আগে চার্জ গঠন করতে হবে ট্রায়াল কোর্টকে। জানুয়ারির মধ্যে শেষ করতে হবে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ। চার্জ ফ্রেম হয়ে গেলে এবং সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ সম্পন্ন হলে, অবিলম্বে ইডি মামলায় জামিন পাবেন পার্থ (১ ফেব্রুয়ারি বা তার আগে)। বিধায়ক পদ ছাড়া কোনও পাবলিক অফিস হোল্ড করতে পারবেন না।
সিবিআই বারবার বলেছিল, পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রভাবশালী, জামিন পেলে সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারে। এই মর্মেও পার্থকে কড়া বার্তা দিল শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কোনওভাবেই সাক্ষীর ওপর প্রভাব খাটানো যাবে না। এমনকি কোনও সাক্ষীকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে হুমকির অভিযোগ এলেই জামিন বাতিল হবে।
গত সপ্তাহের বুধবার অর্থাৎ ৪ ডিসেম্বর শুনানির পর রায়দান স্থগিত রাখে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চ। জানা গিয়েছে , জামিন পেলেও তাঁর জেলমুক্তি ঘটবে না। যেহেতু সিবিআইয়ের মামলা রয়েছে, তাই এখনই তিনি ছাড়া পাবেন না।আদালত জানিয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পার্থ জামিন পাবেন। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহের বুধবার, ৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে ইডির দায়ের করা মামলায় জামিনের আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সেদিনের শুনানির পর রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চ। সেই মামলার শুনানিতে এদিন জামিন পেলেন পার্থ।
গত বুধবার ইডির দায়ের করা মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় জামিন পাওয়ার যোগ্য বলে শুনানিতে পার্থর আইনজীবী মুকুল রোহতগি সুপ্রিম কোর্টে দাবি করেছিলেন – ‘আর্থিক তছরুপ মামলায় সর্বোচ্চ সাজা সাত বছর। অর্থাৎ, ৮৪ মাসের সাজা হতে পারে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন ছাড়া অন্য কোনও মামলার অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ সাজার এক তৃতীয়াংশের বেশি সময় বিচারাধীন অবস্থায় হেফাজতে রাখা যায় না। সেই সময়সীমা অর্থাৎ ২৮ মাস ইতিমধ্যেই পার করে গিয়েছেন পার্থ। অতএব তাঁর জামিন এবার মঞ্জুর করা উচিত শীর্ষ আদালতের’। এহেন সওয়াল ছিল পার্থের আইনজীবীর।