পঞ্চায়েতের পদাধিকারীরাই ‘বাংলার বাড়ি’ নির্মাণের কাজে নজরদারি করবেন

বাংলার বাড়ি প্রকল্প। ছবি: ইন্টারনেট।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প ‘বাংলার বাড়ি’ নির্মাণের কাজে এবার নজরদারি করবেন পঞ্চায়েতের পদাধিকারীরা। এই প্রকল্পে কার বাড়ি নির্মাণের কাজ কতদূর এগোলো, সঠিক গুণমানের সামগ্রী দিয়ে বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবেন পঞ্চায়েতের এই প্রতিনিধিরা। নির্দিষ্ট সময় অন্তর খোঁজ নিয়ে সেই রিপোর্ট বিডিও অফিসে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পঞ্চায়েতের এই পদাধিকারীদের পাশাপাশি ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের সদস্যরাও উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরির অগ্রগতি খতিয়ে দেখবেন। তাই গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলাপরিষদের সদস্যদের এই গৃহনির্মাণের অগ্রগতির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। উপভোক্তাদের বাড়ি নির্মাণে কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা, সেবিষয়েও খোঁজখবর নেবেন তাঁরা।

উল্লেখ্য, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ১২ লক্ষ উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৬০ হাজার টাকা করে দিয়েছে। এবার রাজ্যজুড়ে সেই বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এই ১২ লক্ষ বাড়ি তৈরির কাজ নিয়ম মেনে এগোচ্ছে কি না, তার তদারকি করাও কম ঝক্কির ব্যাপার নয়। একটি ব্লকের প্রশাসনে যে কর্মী ও আধিকারিকরা রয়েছেন, তাঁদের দিয়ে এই কাজ সম্পন্ন করা সহজ নয়। সেজন্য পঞ্চায়েতের পদাধিকারীদের এই কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। এ বিষয়ে পঞ্চায়েত দপ্তরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ব্লকে কে বাড়ি পাচ্ছেন, কে যোগ্য, কে অযোগ্য – তার তালিকা চূড়ান্ত থেকে বাড়ি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত বিডিও-র হাতে সব ক্ষমতা থাকলেও এই প্রকল্প বাস্তবায়নে রাজ্য সরকারের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও একটা ভূমিকা রয়েছে।


এর আগে এই ধরনের প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ঠিকঠাক হচ্ছে কিনা, তা দেখভালের জন‌্য একটা প্রশাসনিক ফান্ড দেওয়া হয় সেই দপ্তরকে। স্থানীয় ছেলেদের নিযুক্ত করা হত এই অর্থ দিয়ে। কিন্তু কেন্দ্র সরকার আবাস যোজনার টাকা থেকে বাংলাকে বঞ্চিত করেছে। সেজন্য রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে এই ১২ লক্ষ বাড়ি নির্মাণে প্রতিটি বাড়ি পিছু ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা কোষাগার থেকে ব্যয় করছে। এই বিপুল অর্থ দেওয়ার পর নবান্ন আর আলাদা করে কাজের অগ্রগতি দেখভালের জন্য স্থানীয় কোনও লোক নিয়োগ করছে না। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতের পদাধিকারীদের।

এ বিষয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রথম কিস্তির টাকা উপভোক্তারা পেয়ে গিয়েছেন। সেই টাকা দিয়ে সঠিকভাবে এই বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে কি না, তার নজরদারি স্থানীয় পঞ্চায়েতের পদাধিকারীরাই করবেন। কারও কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না বাড়ি তৈরিতে তা দেখভালও তো করতে হবে।’