সদ্য হাতে এসেছে মহারাষ্ট্র। উদ্ভবের সংসার ভেঙে শিব সে নার ‘ নিউক্লিয়াস’ এখন মোদী- শাহের হাতে। আর ২৪ শের ‘ফাইনাল ম্যাচ’কে সামনে রেখে এবার বিজেপির টার্গেট বাংলা।
লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ২৫ টি আসনের টার্গেট করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ‘ আব কি বার ২০০ পার’ স্লোগানের পরও মাত্র ৭৭ এ আটকে গিয়েছে বিজেপির রথ।
বিজেপি সূত্রে খবর, ২০২৪ সালে বাংলা থেকে খুব একটা বেশি আস ন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমনকী লোক সভা নির্বাচনে কেন্দ্রে ও নিরঙ্কুশ সংখ্যা
পাওয়া নিয়েও সংশয় আছে দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের ভোট ম্যানেজারদের মধ্যে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গোটা দেশে দুর্বল থেকে দুর্বল হচ্ছে কংগ্রেস।
অপরদিকে মোদী বিরোধী মুখ হিসাবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রীতিমত আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠছে গেরুয়া শিবিরে।
অন্যদিকে নির্বাচন হলে বিজেপি তৃণমূলের কাছে কার্যত ‘ওয়াশ আউট’ হতে যাবে। সাম্প্রতিক পৌরসভা নির্বাচনে কার্যত বাম, কংগ্রেসের থেকেও নিচে চলে গিয়েছে বিজেপি।
অপরদিকে গোষ্ঠী কোন্দলে জর্জরিত বর্তমান রাজ্য নেতৃত্বের উপর খুব একটা ভরসা রাখতে পারছে না জে পি নাড্ডারা।
সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য থেকে প্রায় ২৫-৩০ টা আসনের টার্গেট করে এগোচ্ছে পদ্ম শিবির।
সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা আসন জিততে ‘ স্থানীয় প্রশাসন’ কে দরকার বলে মনে করছেন অমিত শাহ। আর তাই মহারাষ্ট্রের ফর্মুলাতে বাংলা ‘ দখল ‘ করতে চাইছে পদ্ম শিবির।
ইতিমধ্যেই একাধিকবার “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ভেঙে দেওয়া”র কথা শোনা গিয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মুখে। তবে কি এবার সেই মহারাষ্ট্র মডেলেই বঙ্গ দখল করতে চাইছে বিজেপি?
সূত্রের খবর, বাংলা দখলের জন্যে প্রাথমিকভাবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ধরেছে কেন্দ্রীয় বিজেপি। এই ‘ অপারেশন লোটাস’
এর জন্যে সাজানো হয়েছে গেম প্ল্যানও। আপাতত বিজেপির অফিসিয়াল বিধায়কের সংখ্যা ৭০। হিসাব অনুযায়ী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ফেলতে এই মুহূর্তে বিজেপির দরকার ৮০-৯০ জন বিধায়ক।
সেই মতো রীতিমত হিসাব কষে এগোচ্ছে গেরুয়া শিবির। অর্থ বা কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূলের বিধায়ক ভাঙার ঘুটি সাজাচ্ছে বিজেপি।
বিজেপি সূত্রের খবর, তালিকা তৈরি করে গুরুত্ব বুঝে ঠিক করা হচ্ছে অর্থের পরিমাণ। ৩০ কোটি থেকে ১০০ কোটি পর্যন্ত ‘রেট ‘ ধরা হয়েছে। তালিকায় বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও আছে।
এর পাশাপাশি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, এবং উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলার তৃণমূল বিধায়কদের টার্গেট করে ফোন ও করা হয়েছে, এর বাইরেও যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে সেই সমস্ত বিধায়কদের ইডি বা সিবিআইয়ের ‘ভয়’ ও দেখানো হচ্ছে।
বিজেপি সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেশ কয়েকজন তৃণমূল বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে পদ্ম শিবির। লক্ষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিধানসভায় অনাস্থা এনে সরকার ফেলে দেওয়া।
যার ব্লু প্রিন্ট তৈরি হচ্ছে খোদ অমিত শাহে’র সবুজ সংকেত পাওয়ার পর। তবে বিজেপিরই একটা বড় অংশের মতে,
রাজ্যে বিপুল জনা দেশ নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে খাবে দাঁড়িয়ে এই সিদ্ধান্ত কার্যত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ‘ওয়াক ওভার’ দেওয়ার সামিল।
২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে আসন সংখ্যায় বিজেপিকে দুরমূশ করলেও ভোট প্রাপ্তিতে তৃণমূলের প্রায় কাছাকাছি গেরুয়া শিবির।
সূত্রের খবর , তা সত্ত্বেও সরকার ফেলে দিয়ে সরাসরি নির্বাচনে যেতে চাইছে না গেরুয়া শিবির।২০২৪ সালে কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় এলেও, গোটা দেশে প্রায় ৫০-৬০ টি আসন কম পেতে পারে এনডিএ।
বিজেপির শাসিত রাজ্য গুলো থেকেও সেই ঘাটতি পূরণের সম্ভাবনা নেই, তাই অ-বিজেপি রাজ্য থেকে সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে চান অমিত শাহ-জেপি নাড্ডারা।
অপরদিকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যে এই মুহূর্তে মোদী-শাহের মাথা ব্যথার মূল কারণ, তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘দুর্বল’ করতে পারলেই যে গোটা দেশে বিরোধী ঐক্যে ফাটল ধরানও সম্ভব বলে মনে করছেন পদ্ম শিবিরের থিঙ্ক ট্যাংকররা।
আর তাই হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে বা কেন্দ্রীয় সংস্থার ভয় দেখিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ফেলে দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় বিজেপি।