বড় বদল হল শাসকদল তৃণমূলের সাংগঠকি ক্ষেত্রে। একাধিক জেলাকে সাংগঠনিকভাবে ভাঙার পাশাপাশি বদল হল একাধিক জেলা সভাপতিও। যাঁরা ইতিমধ্যেই নানান পদে রয়েছেন, এমন জেলা সভাপতিদের সরানাে হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে জেলা সভাপতি পদে রয়েছেন, এমনও অনেককে রানাে হয়েছে।
মন্ত্রী, সাংসদরা বাদ গিয়েছেন জেলা সভাপতির পদ থেকে। একাধিক জেলায় তরুণ মুখকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল ভবনে গত ৫ জুনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল দলে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি কার্যকর করা হবে।
আজ, সােমবার দলের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কথা ঘােষণা করা হল। একাধিক জেলাকে ভাঙ হয়েছে। যেমন, উত্তর ২৪ পরগনাকে চার ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি ও বাঁকুড়াকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।
কোন বিধানসভা কোন সাংগঠনিক জেলার মধ্যে থাকবে তাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনার মতাে প্রায় একাধিক জেলাগুলিতেই সভাপতি পদে বদল করা হয়েছে। মহুয়া মৈত্র, অরূপ রায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সৌমেন মহাপাত্রকে সরানাে হয়েছে জেলা সভাপতির পদ থেকে।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার নবনির্বাচিত সভাপতি হলেন বিধান উপাধ্যায়। আগে জেলার সভাপতি ছিলেন অপূর্ব মুখােপাধ্যায়। এছাড়াও পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি নির্বাচিত করা হয় মন্ত্রী মলয় ঘটকের ভাই অভিজিৎ ঘটককে।
এই পদে আগে ছিলেন বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের নতুন সভাপতি হলেন রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি কাটোয়ার বিধায়ক। আগে জেলা তৃণমূল সভাপতি ছিলেন স্বপন দেবনাথ।
তৃণমূল ‘এক ব্যক্তি এক পদ নীতি’ চালু করায় স্বপনবাবু জেলা সভাপতির পদ থেকে বাদ পড়লেন। তিনি বর্তমানে রাজ্যের ক্যাবিনেট মন্ত্রী। বীরভূম জেলায় কোনও সাংগঠনিক ভাগ হয়নি। শুধু জেলা যুব সভাপতি বিধান মাঝির জায়গায় দেবব্রত সাহাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান ছিলেন আগে কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। এখন হলেন রতুয়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক সমর মুখােপাধ্যায়। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কমিটিতেও ব্যাপক রদবদল করা হয়েছে। গৌতম দাসকে সরিয়ে নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উজ্জ্বল বসাককে। চেয়ারম্যান পদ থেকে বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে নিখিল সিংহ রায়কে।
এছাড়া বিভিন্ন পদে রদবদল হয়েছে। নদিয়া, মুর্শিদাবাদের মতাে জেলাগুলির সভাপতি বদল হয়েছে। ভাঙা হয়েছে সাংগঠনিক ভাবেও মহুয়া মৈত্র নদিয়া জেলার সভানেত্রী ছিলেন। তাঁকে ওই পদ থেকে সরানাে হয়েছে।
হাওড়া গ্রামীণের পদ থেকে সরানাে হয়েছে পুলক রায়কে। পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা সহ একাধিক জেলার সভাপতি বদল হয়েছে। বাদ পড়েছেন মন্ত্রীরা।