জামিনে মুক্ত নবান্ন অভিযানের অন্যতম আহ্বায়ক সায়ন লাহিড়ি, সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতে রাজ্য

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নবান্ন অভিযান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে ২৭ আগস্ট ছাত্রনেতা সায়ন লাহিড়িকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ। তাঁকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবারই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তাঁকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার।

গত মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল ‘পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রসমাজ’ নামক ছাত্রদের একটি রাজনৈতিক মঞ্চ। সেই মঞ্চের নেতৃত্ব হিসেবে উঠে আসে যাঁদের নাম, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন এমবিএ পড়ুয়া সায়ন লাহিড়ির নাম। তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পরে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সায়নের পক্ষে সবরকম আইনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন। তিনি জানান, তাঁর জামিনের জন্য ভালো উকিলও নিয়োগ করবেন তিনি।

গত শুক্রবার সায়নের মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে ওঠে। সায়নকে গ্রেপ্তারির জন্য রাজ্য সরকারকে বিচারপতি সিংহের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়।


সায়নের গ্রেপ্তারির সিদ্ধান্তকে বৈধতা দিতে রাজ্য সরকার ধৃত ছাত্রনেতার ‘প্রভাবশালী’ হওয়ার তত্ত্ব খাড়া করে। রাজ্য সরকারের তরফে আদালতে এটাও জানানো হয়, সায়ন নবান্ন অভিযান কর্মসূচির অন্যতম হোতা। পুলিশি অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও এই কর্মসূচি হয়। মিছিল-জমায়েতও হয়– যা কোনওভাবেই ‘শান্তিপূর্ণ’ ছিল না বলেই সরকার দাবি করেছে।

এই প্রসঙ্গে বিচারপতি সিংহ সায়নের রাজনৈতিক দলের পরিচয় জানতে চান। এর উত্তরে রাজ্য সরকার তাঁর ‘ছাত্রনেতা’ পরিচিতির কথা জানালে বিচারপতি সিংহ বলেন, তাহলে তিনি ‘প্রভাবশালী’ কীভাবে হচ্ছেন? সায়নের রাজনৈতিক অতীত, কোনওপ্রকার সক্রিয় রাজনীতিতে সায়ন ছিলেন কিনা – এই সবই জানতে চান তিনি। তিনি বলেন, ‘ওই ছাত্রনেতা কি এতই প্রভাবশালী, যে তিনি ডাক দিলেন আর হাজার হাজার লোক জড়ো হয়ে গেল?’

নবান্ন অভিযানের পূর্বে সায়নের নামে যে কোনও অভিযোগ বা মামলার উপস্থিতি নেই, আদালতে সেই কথাও উঠে আসে। সায়নের ‘প্ররোচনামূলক’ বক্তব্যের দাবিও বিচারপতি সিংহের এজলাসে ধোপে টেকেনি। ফলত, একপ্রকার বাধ্য হয়েই সায়নকে জামিনে মুক্তি দিতে হয়।

এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই শনিবার শীর্ষ আদালত, অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাতে চলেছে রাজ্য সরকার।