মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য

মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়ার অভিযোগ। সন্তান জন্ম দেওয়ার পরই অসুস্থ একের পর এক প্রসূতি। একজনের মৃত্যু হয়েছে। চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের। গোটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মুখে কুলুপ এঁটেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

প্রসূতিদের পরিবারের অভিযোগ, সন্তান জন্মের পর থেকেই তাদের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তপাত শুরু হয়। স্যালাইনের সমস্যা থেকেই এই জাতীয় ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি প্রসূতিদের পরিবারের সদস্যদের। কারও অভিযোগ, মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। স্যালাইনে ছত্রাক থাকার অভিযোগও করেছেন অনেকে।

ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার থেকেই বিভিন্ন অভিযোগ আস্তে শুরু করে। মৃত প্রসূতির পরিবারের অভিযোগ, সন্তান সুস্থই ছিল। কিন্তু প্রসূতির শারীরিক অবস্থা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ তাদের অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে তারা জানতে পারেন, সন্তান জন্মের পর থেকেই প্রসূতিদের অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। রক্তক্ষরণ কিছুতেই বন্ধ হচ্ছিল না।


হাসপাতালে সিনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে জুনিয়র ডাক্তার, কেউই ছিলেন না, এমনটাই দাবি প্রসূতিদের পরিবারের এক সদস্যের। এছাড়া সরকারি মেডিকেল কলেজে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তারা। তাদের দাবি, বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তাদের থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার থেকেই অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করে। প্রসূতিদের আত্মীয়রা জানান, সন্তান সুস্থ আছে। প্রথমটায় তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। পরে জানতে পারেন প্রসূতিদের রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছে না। আত্মীয়দের আরও অভিযোগ, সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হওয়া সত্ত্বেও রোগীদের কাছ থেকে বিভিন্ন কারণে টাকা নেওয়া হচ্ছে। পরিবারের এক সদস্য দাবি করেছেন, অপারেশন করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা, সিনিয়র কেউ সেখানে ছিলেন না।

এর আগে কলকাতায় এসএসকেএম, এনআরএস হাসপাতালেও এই স্যালাইনের সমস্যার কথা উঠে এসেছিল। কয়েকদিন আগে কর্নাটকেও স্যালাইনের কারণে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর আসল কারণ জানতে ময়নাতদন্তে রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন সকলে। ইতিমধ্যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে প্রসূতিদের চিকিৎসা করা হচ্ছে।

বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন, একটি মেডিক্যাল কলেজেই যদি স্যালাইনে সমস্যা থাকে, তাহলে স্বাস্থ্যক্ষেত্রগুলির অবস্থা কী? জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন থেকে রাজ্য কী শিক্ষা নিল, সেই প্রশ্নই তুলছেন বিজেপি নেতা।