বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে উঠে একশো দিনের প্রকল্প বিষয়ক মামলা। রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ আদৌ হচ্ছে কি না? তা এবার রাজ্যের কাছে জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল,’ ওই প্রকল্পে উঠে আসা দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান হয়েছে। ওই প্রকল্পের কাজ যেন বন্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্যকে’।
১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলায় বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি বিভাস পট্টনায়েকের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ‘ওই প্রকল্প ঘিরে নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রকল্পের কাজ যেন বন্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য সরকারকে’।
এ জন্য রাজ্যকে সাতদিনের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে আদালত। এদিন কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবী জানান, ‘ প্রকল্পের টাকা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের দ্বন্দ্বের ফলাফল হিসাবে প্রায় দু’বছরের কাছাকাছি কাজ বন্ধ রয়েছে’। এর পরেই রাজ্যের থেকে কাজের খতিয়ান চেয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ । আগামী ৩ অক্টোবরের মধ্যে রাজ্যকে জানাতে হবে, একশো দিনের কাজ চলছে কি না?
উল্লেখ্য, ১০০ দিনের কাজে কেন্দ্রীয় অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, ‘ কেন্দ্রীয় সরকারের মনরেগা প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি করা হয়েছে। ভুয়ো জব কার্ড, মৃত ব্যক্তির নামে জব কার্ড, অসত্য তথ্য দিয়ে জব কার্ড তৈরি করে কেন্দ্রের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। গ্রামে বসবাস করেন না এমন ব্যক্তিদের নামেও জব কার্ড তৈরি করে দুর্নীতি করা হয়েছে। এমনকি ভুয়ো জব কার্ডের টাকা তোলার জন্য প্রচুর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের অপব্যবহার করা হয়েছে। ওই দুর্নীতির তদন্ত সিবিআইকে দেওয়া হোক’।
এর পরেই ভুয়ো কার্ড শনাক্ত করতে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রকল্পের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় দল পাঠায় কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁদের অনুসন্ধানের ওপর ভিত্তি করে গতবছর মার্চমাসে প্রকল্পের অর্থ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। এরপর, ১০০ দিনের কাজে মজুরির টাকা না দেওয়ার অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা করেছে পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেত মজদুর সমিতিও। তাঁদের দাবি, ‘কর্মীরা ১০০ দিনের কাজ করেছেন, অথচ কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে এই নিয়ে টানাপড়েনের জন্য প্রাপ্য টাকা পাচ্ছেন না’। এখন দেখার রাজ্য কী রিপোর্ট দেয় কলকাতা হাইকোর্টের কাছে?