লক্ষ্মীপুজো মিটতেই হাসি ফুটল গৃহলক্ষ্মীদের মুখে। লক্ষ্মীবারেই রাজ্যের এক কোটিরও বেশি মহিলার অ্যাকাউন্টে ঢুকল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের টাকা। নবান্ন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারই সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসের টাকা একসঙ্গে ঢুকেছে প্রায় এক কোটিরও বেশি গৃহলক্ষ্মীদের অ্যাকাউন্টে। এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকারের ১০৮২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
প্রসঙ্গত লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য জমা পড়েছিল ১ কোটি ৬০ লক্ষের মতো আবেদনপত্র। বাকি ৬০ লক্ষ মহিলার অ্যাকাউন্টে অতি দ্রুত টাকা যাতে পৌছে যায়, সেজন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
এমনকী এক্ষেত্রে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাওয়ার বিষয়টিতে আরও সরলীকরণ করতে চাইছে রাজ্য সরকার। এর আগে নিয়ম ছিল লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য আবেদন করতে হলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, জাতিগত শংসাপত্র এবং আধার কার্ড থাকা বাধ্যতামূলক। সেই নিয়মে এবার আনা হচ্ছে বদল। এখন থেকে এই নথিগুলি না থাকলেও আবেদনকারীরা যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
শুক্রবার নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করার পরে নারী ও শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতর এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করল। এদিকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে যাঁরা আবেদন করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ৩৫ লক্ষের মতো আবেদনকারীর আবেদনপত্র অসম্পূর্ণ। এর মধ্যে ২৬ লক্ষের মতো আবেদন ত্রুটিপূর্ণ।
৮ লক্ষের মতো মহিলা এই প্রকল্পের সুবিধে পাচ্ছেন না, ব্যাঙ্কের ভ্যালিডেশন ঠিক না থাকায়। সব মিলিয়ে ২০ শতাংশের মতো আবেদনকারী নথিপত্র এবং ব্যাঙ্কিং পরিষেবার কারণে এই প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
শুক্রবার মুখ্যসচিব সমস্ত জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন যাতে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। প্রসঙ্গত উপনির্বাচন থাকায় কোচবিহার, নদিয়া, দুই চব্বিশ পরগণায় এখন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের টাকা দেওয়া যাবে না।
তাই এই চার জেলার আবেদনকারী মহিলারা নভেম্বর মাসে একসঙ্গে তিন মাসের টাকা পাবেন বলে জানা গিয়েছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ইস্তেহারেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের কথা। নির্বাচন মিটতেই সেই প্রতিশ্রুতি রাখলেন মমতা।
এই প্রকল্পটি ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলে দিয়েছে। সাধারণ বাড়ির মহিলারা এই প্রকল্পের সুবিধে পাওয়ার জন্য উদ্যোগী হয়ে উঠেছেন। বহু মহিলা নতুন করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খুলেছেন।
ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার ব্যাঙ্কগুলির কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধে যাতে উপভোক্তারা পেতে পারে, সেজন্য উদ্যোগী হতে। এবার জেলাশাসকদেরও সেই বিষয়ে তৎপর হতে নির্দেশ দেওয়া হল।