কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার পাসপোর্ট জালিয়াতি কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত মনোজ গুপ্ত। শনিবার মধ্যরাতে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা এলাকার এক ভাড়া বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জাল নথি ব্যবহার করে পাসপোর্ট তৈরির চক্রের অন্যতম মাথা এই মনোজ। আদতে কলকাতার ঠাকুরপুকুর থানার শীলপাড়া এলাকার বাসিন্দা হলেও পুলিশের চোখে ধুলো দিতে মনোজ গাইঘাটায় ভাড়া থাকা শুরু করে। দিন দুয়েক আগে গাইঘাটা আসে সে। তবে ঠিকানা বদলেও শেষরক্ষা হল না।
পুলিশের অনুমান, ভুয়ো নথিপত্র ব্যবহার করে পাসপোর্ট তৈরির কাজ করছে একটি চক্র। মাস দু’য়েক আগে ভবানীপুর থানায় একটি পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের হয়। সেই ঘটনারই তদন্তে নেমে চমকে দেওয়া তথ্য হাতে আসেপুলিশের। কলকাতা এবং শহরতলির বেশ কয়েকটি জায়গায় হানাও দেয় পুলিশ। কিছুটা তদন্তের পর পুলিশ জানতে পারে, ঠাকুরপুকুর থানার শীলপাড়া এলাকার বাসিন্দা মনোজ এই চক্রের অন্যতম মাথা। এরপর তার খোঁজ শুরু করে পুলিশ। অবশেষে গাইঘাটা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাসপোর্ট কাণ্ডে এই নিয়ে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।
সূত্রের দাবি, বেহালার সখের বাজারে ট্রাভেল এজেন্সি সংস্থার আড়ালে চলত জাল পাসপোর্ট তৈরি। পাসপোর্ট বানানোর জন্য তৈরি হত ভুয়ো পরিচয়পত্র। এর মধ্যে অন্যতম ছিল আধার কার্ড। ধৃত মনোজের নিজস্ব কম্পিউটারেই বানানো হত জাল নথি। এর আগে ওই ট্রভেল এজেন্সিতে কর্মরত দীপঙ্কর নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
এর আগেও মনোজের সন্ধানে বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। তবে প্রত্যেকবারই পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালাতে সক্ষম হয় সে। শনিবার মধ্যরাতে গাইঘাটার চাঁদপাড়া ঢাকুরিয়া এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মনোজকে ধরে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক পরিচিতের মাধ্যমে ওই এলাকার একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয় মনোজ। বিশ্বজিৎ দাস নামে একজন ওই বাড়িটি ভাড়া নিলেও তিনি সেখানে থাকতেন না। এক মহিলা সঙ্গে ওই ঠিকানায় থাকছিলেন মনোজ। সেই মহিলা অবশয় জানিয়েছেন, তিনি মনোজকে চেনেন না। তাঁর এক আত্মীয় মনোজকে ওখানে পাঠিয়েছে।
আদালতের ধমক খাওয়ার পর থেকেই ভুয়ো পাসপোর্ট নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে লালবাজার। পাসপোর্টের পুলিশি যাচাই নিয়ে থানার ওসিদের একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন নগরপাল মনোজ ভার্মা। পাসপোর্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত নোডাল অফিসারদের সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।