ওমিক্রন নিয়ে ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দেশজুড়ে ওমিত্রন আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
আগেভাগে এই বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন না করলে আমজনতার কাছে ওমিক্রন বড়সড় বিপদের কারণ হতে পারে। ফলে দেশের প্রতিটি রাজ্যেই স্বাভাবিক চলাফেরার উপর বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদেরও এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ আসছে বর্ষশেষের প্রাক্কালে ওমিক্রন যাতে ছড়িয়ে পড়তে একদিকে আমজনতাকে করা, অন্যদিকে তার মোকাবিলায় পর্যাপ্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য সরকারি উদ্যোগ জারি রয়েছে।
পারে, তার জন্য এদিকে কলকাতায় আবারও ওমিক্রন আক্রান্তের হদিশ মিলল। আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন ফেরত এক যুবকের শরীরে ধরা পড়েছে সংক্রমণ।
এই নিয়ে কলকাতায় ওমিক্রন-পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩। ডাবলিন থেকে বিমানে ওঠার আগে কোভিড টেস্ট করিয়েছিলেন ওই যুবক। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
এরপর ডাবলিন থেকে ম্যানচেস্টার, আবুধাবি ও দিল্লি হয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন তিনি। জানা গেছে, জ্বর, সর্দি-কাশির মতো হালকা উপসর্গ ছিল তাঁর। কলকাতায় ফেরার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
করোনা পরীক্ষার রিপোর্টও পজিটিভ আসে। এরপর জিনোম সিকোয়েন্স করিয়ে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের হদিশ মেলে। আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে তাঁকে।
কোভিড ইউনিটে তার চিকিৎসার সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। যুবকের শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা বলছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্ট শরীরে ঢুকেছে কিনা, তা জানা যাবে একমাত্র জিনোম সিকোয়েন্স করলে।
তাই রাজ্যে নতুন যাঁরা আসছেন বা আগে ভ্রমণের রেকর্ড আছে, তাদের আরটি-পিসিআর টেস্ট করিয়ে নমুনা জিনোম সিকোয়েন্স করা জরুরি। শুধুমাত্র আক্রান্ত ও তার চারপাশের লোকজন নয়, আরও বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা করানো জরুরি।
কারণ উপসর্গহীন রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে রাজ্যে। তাঁদের থেকে সংক্রমণ হু হু করে ছড়িয়ে পড়ছে। তাই কোভিড টেস্টের পাশাপাশি কনট্যাক্ট ট্রেসিংও জরুরি।
আক্রান্তের সংস্পর্শে কতজন এসেছেন, তা চিহ্নিত করা যাবে কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমেই। আর ২৫-৩০ দিনের মধ্যে ওমিক্রনের সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
এখন থেকেই সংক্রমণ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। রাজ্যে এই নিয়ে ওমিক্রন রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে পাঁচ। নাইজেরিয়া ফেরত ৬৯ বছরের এক বৃদ্ধের শরীরে ওমিক্রন ধরা পড়েছে।
অন্যদিকে লন্ডন ফেরত আলিপুরের এক যুবক ওমিক্রন আক্রান্ত। দু’জনেই কলকাতার বাসিন্দা। আলিপুরের যুবকও লন্ডন থেকে ফিরেছিলেন সম্প্রতি। তিনিও ওমিক্রন পজিটিভ।
রবিবার লন্ডন থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার এআই ১৬৪ বিমানে কলকাতা বিমানবন্দরে নামার পরই তাঁর আরটি-পিসিআর টেস্ট করা হয় । রিপোর্ট পজিটিভ আসায় তাকে অন্যান্য যাত্রীদের থেকে আলাদা করে রাখা হয়।
পরে তাঁকে ঢাকুরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার নমুনা নিয়ে জিনোম সিকোয়েন্স করার পরেই ওমিক্রন ধরা পড়ে। দু’জনকেই কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।