অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপাল যে ভাষণ পাঠ করবেন তার খসড়া রাজ্য মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্তের পরই আইন মােতাকে ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যপালের কাছে। সাংবিধানিক রীতি মেনে রাজভবনে পৌঁছে যাওয়া ওই খসড়া আগামী ২ জুলাই, শুক্রবার দুপুর দু’টোয় জগদীপ ধনকড়ের পাঠ করার কথা।
কিন্তু সােমবার উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরে রাজ্যপাল ওই খসড়ায় কিছু লাইনে তাঁর আপত্তি জানিয়ে পরিবর্তনের জন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে রাজভবনে ডেকে পাঠিয়েছেন। নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যপাল ডাকলে সাংবিধানিকভাবে রাজভবনে যেতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও আপত্তি নেই।
কিন্তু রাজ্যপাল যদি লিখিত ভাষণের খসড়া পরিবর্তনের জন্যই ডাকেন তা হলে মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ, সাংবিধানিক রীতি অনুযায়ী রাজ্যপালের ভাষণ সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারই লিখে দেয়, রাজ্য মন্ত্রিসভায় অনুমােদন করার পর রাজ্যপাল শুধু পাঠ করেন।
এক্ষেত্রে রাজ্য মন্ত্রিসভা ইতিমধ্যে আইন মেনে ওই ভাষণের খসড়া অনুমােদন করে দু’দিন আগে রাজভবনে পাঠিয়েও দিয়েছে, তাই কোনওভাবে খসড়া পরিবর্তন সম্ভব নয়। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাও যে লিখিত ভাষণ অনুমােদন করে রাষ্ট্রপতিকে পাঠায় তিনিও তাই হুবহু পাঠ করেন বলে রীতি।
শুক্রবার দুপুরে রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে নবনির্বাচিত সরকারের বাজেট অধিবেশন শুরু হবে। প্রায় দু’সপ্তাহের এই বাজেট অধিবেশন নিয়ে এদিন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বদলীয় বৈঠক করে পরিষদীয় রীতিনীতি মেনে আসন্ন অধিবেশনে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় সাহায্যের আবেদন করেন স্পিকার।
পরে বিধানসভার কার্যবিবরণী কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে আগামী জুলাই পর্যন্ত অধিবেশনের কার্যসূচি ঠিক হয়। প্রথমদিন ২ জুলাই রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়াও দ্বিতীয় পর্বে ডেপুটি স্পিকার পদে রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্বাচিত করা হবে। ৭ জুলাই নয়া সরকারের বাজেট পেশ হবে।
সূত্রের খবর, অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অসুস্থ থাকায় শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই বাজেট পড়তে পারেন। আগামী ৫ জুলাই শােকপ্রস্তাব এবং ৬ জুলাই রাজ্যপালের ভাষণের উপর ধন্যবাদজ্ঞাপক বিতর্ক শুরু হবে।
তবে ৬ জুলাই দ্বিতীয়ার্ধে বিধানপরিষদ গঠন নিয়ে গঠিত কমিটির রিপাের্টের উপর প্রস্তাব আনা হবে। উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীতালিকা ঘােষণার দিনই মমতা ঘােষণা করেছিলেন, তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে বিধান পরিষদ গঠন করবে তাঁর সরকার।
তৃণমূল কংগ্রেস এবার দলের অনেক প্রবীণ বিধায়ক এবং তরুণ নেতাকেও প্রার্থী করতে পারেনি। তাঁদের বিধান পরিষদে জায়গা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী।