বাড়ছে বিনাটিকিটে যাত্রীর সংখ্যা, সঠিক টিকিট কাটবার অনুরোধ ভারতীয় রেলের পূর্ব শাখার

প্রতীকী চিত্র।

নিত্যযাত্রীদের জন্য যাতায়াতের অন্যতম সুবিধাজনক মাধ্যম নিঃসন্দেহেই রেল। কম খরচে এবং স্বল্প সময়ে অনেকটা দূরত্ব অতিক্রম করতে রেলের জুড়ি মেলা ভার। বিশেষ করে কলকাতা এবং কলকাতা-সংলগ্ন মফস্বল এলাকায় রেলের উপরেই ভরসা করতে হয় নিত্যযাত্রীদের। দিনদিন বাড়তে থাকা গাড়ির সংখ্যার ফলে যানজটের কবলে পড়তে হয় স্কুল-কলেজ বা অফিসযাত্রীদের। তার হাত থেকে সহজেই মুক্তি দেয় রেলযাত্রা। জনসাধারণের কথা মাথায় রেখে রেল টিকিটের দামও রাখা হয়েছে সাধ্যের মধ্যেই। যেমন, উত্তর ২৪ পরগণার খড়দহ থেকে শিয়ালদহের দূরত্ব রেলপথে ১৮ কিমি, যা সড়কপথে আরেকটু বেশি। এই রাস্তা সড়কপথে অতিক্রম করতে সময় লাগে কমপক্ষে এক-সোয়া এক ঘণ্টা, আর সকালের কর্মব্যস্ততার মধ্যে তো আরও বেশি সময় লাগে। ক্যাবে করে এই পথ যেতে গেলে ন্যূনতম ৩০০-৬০০ টাকা লাগে, বাসে করে গেলেও বেশ অনেকটাই টাকা খসে যায়। কিন্তু এই দূরত্বের জন্য রেলভাড়া লাগে মাত্র ৫ টাকা, আর সময় আন্দাজ ৩৮-৪০ মিনিট। এর থেকেই আন্দাজ করা যাচ্ছে, রেলযাত্রা ঠিক কতটা সাশ্রয়ী – অর্থ এবং সময়, দুইদিক থেকেই।

তা সত্ত্বেও, দিন দিন বেড়েই চলেছে বিনা টিকিটে যাত্রার প্রবণতা। অজ্ঞানতাবশতই হোক, বা আইনকে ফাঁকি দেওয়ার দুরভিসন্ধি থেকেই হোক না কেন, টিকিট কাটতে চান না অনেকেই। অথচ, টিকিট কাটবার জন্য এখন একাধিক সুবিধাজনক মাধ্যম রয়েছে। রেলস্টেশনে লাইন দিয়ে যাতে টিকিট কাটতে না হয়, তার জন্য অনলাইনে রেলেরই ইউটিএস অ্যাপের মাধ্যমেই সহজে কেটে নেওয়া যায় টিকিট। এছাড়াও, এটিভিএম এবং কিউআর কোডের মাধ্যমেও টিকিট কাটবার সুবিধে রয়েছে। তা সত্ত্বেও, সচেতনতার অভাব দেখা যাচ্ছে অনেকের মধ্যেই।

চলতি বছরের নভেম্বর মাসে এই সংক্রান্ত মোট ১,৭৭২টি তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। ধরা পড়েন ১,২৫,৪৭৬ জন বিনাটিকিটে যাত্রী! তাঁদের যথোপযুক্ত সাজাও হয়। ডিসেম্বরের বিনাটিকিটে যাত্রীর সংখ্যাটাও উদ্বেগজনক – ১০ ডিসেম্বর অবধি হওয়া মাত্র ৬০৩টি তল্লাশির ঘটনায় ধরা পড়েছেন ৪১,৩৯৯ জন। এই তল্লাশির মধ্যে ফর্ট্রেস তল্লাশি, ম্যাজিস্ট্রেটের তল্লাশি, বিবেক স্পেশাল ,জাগৃতি স্পেশ্যাল এবং মিড-সেকশন তল্লাশি রয়েছে, যা বিনাটিকিটে ভ্রমণ আটকাতে ভারতীয় রেলের পূর্ব শাখার সদাজাগ্রত প্রয়াসেরই পরিচয় বহন করে।


ভারতীয় রেলের পূর্ব শাখার পক্ষ থেকে তাই সকল যাত্রীর কাছে অনুরোধ, সবাই যেন সচেতন নাগরিকের মতো যথাযথভাবে সঠিক টিকিট কেটে যাত্রা করেন। রেলের মতো সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব যানে ভ্রমণ কবার সময়ে যাত্রীরা যদি সচেতনতার পরিচয় দেন, তবেই এই যাতায়াত ব্যবস্থার সার্বিক উন্নতি সম্ভবপর।