রাজ্য রাজ্যপাল সংঘাত। বাংলায় এ যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজভবন ও নবান্নের বিরোধ আর কোনও নতুন খবর নয়।
শিক্ষাক্ষেত্রেও দুইপক্ষের মধ্যে সংঘাত একাধিকবার ঘটেছে। রাজ্যপাল রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য। তিনি উপাচার্যদের ডেকে পাঠান মাঝে মাঝেই।
সেক্ষেত্রে অনেক সময় উপাচার্যরা আসেন না। অনেক সময় তিনি শিক্ষামন্ত্রীকেও জরুরি তলব করেন।
এই নানা ধরনের টানাপোড়েন যাতে না থাকে, তার জন্য রাজ্য মন্ত্রিসভা ২৬ মে ২০২২ একটি উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত নেয়।
বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া একথা আশা করেছিলেন অনেকেই। নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
তিনি বলেন, রাজ্যের মন্ত্রিসভা সর্বসম্মতভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গের যতগুলি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সেখানে আচার্য হিসাবে রাজ্যপালের জায়গায় এখন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নাম প্রস্তাব করা হল।
ব্রাত্যবাবু এই ঘোষণা ছাড়াও রাজ্য সরকারের স্কচ অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার কথাও ঘোষণা করেন। সাংবাদিক বৈঠকে এছাড়া তিনি আর বিশেষ কিছু বলেননি।
তবে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত লাগু করার জন্য বিধানসভায় অবশ্যই আইন সংশোধন করতে হবে।
এটা কি বিধানসভার অধিবেশন করে হবে, নাকি অর্ডিন্যান্স করে হবে, এ বিষয়ে বিশেষ কিছু জানা যায়নি।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আরও জানান, রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। দ্রুত আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে। বিধানসভায় বিশেষ প্রস্তাব পাঠানো হবে।
নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যপাল সব বিষয়ে রাজ্য সরকারের বিরোধিতা করেন। তাঁর কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়া যায় না।
প্রয়োজনীয় বিলে সই করতে কিংবা শিক্ষাক্ষেত্রে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার অসৌজন্য ও অসহযোগিতা দেখান। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে অকারণ দেরি হয়।
তাই মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার এই সিদ্ধান্ত এবং দ্রুত আইনি প্রক্রিয়া কার্যকর করতে চাই বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। দক্ষিণ ভারতে দু-একটি রাজ্যের উদাহরণও তুলে ধরা হয়।
তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধিনস্ত বিচারপতি পুঞ্চি কমিশন এ ব্যাপারে সুপারিশ করেছিলেন।
নবান্ন সূত্রে একথা জানা যায়। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন , বাংলার রাজ্যপাল আসলে বিজেপির লোক ।
রাজ্যের সঙ্গে তিনি কোনও ব্যাপারেই তিনি সহযোগিতা করেন না। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে আসীন রাজ্যপাল।
কিন্তু প্রয়োজনীয় কোনও কাজই করেন না। মুখ্যমন্ত্রী সেই পদে এলে যথেষ্ট ভালো কাজ হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান কুণালবাবু।