‘দখলমুক্ত করা হচ্ছে না’, হকার উচ্ছেদ প্রসঙ্গে হকারদের স্বস্তির বাণী ফিরহাদের 

নিজস্ব প্রতিনিধি: হকারদের সম্পূর্ণ ভাবে উচ্ছেদ করা হচ্ছে না। হকাররা মূল রাস্তা ছেড়ে নির্দিষ্ট জায়গা বসে ব্যবসা করুন, শনিবার বিকালে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানিয়ে দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। হকার উচ্ছেদ প্রসঙ্গে ফিরহাদ বার্তা, “আইন সবাইকে মানতে হবে। আমাদের জীবনযাপন করার অধিকার আছে। আমরা চাইনা কারো দোকান অযথা বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেব। আমরা চাই যে সুপ্রিম কোর্টের হকার বিষয়ক নির্দেশ অনুযায়ী, হকারদের একটি সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসা। লিভ এন্ড লেট লিভ করতে হবে। বেড়োনো আর ঢোকার রাস্তা ছেড়ে রাখতে হবে। যেমন চাঁদনী চকের মতো এলাকা গুলিতে মূল রাস্তার থেকে ৫০ ফুট পর্যন্ত নো ভেন্ডিং জোন থাকবে।” এদিন ফিরহাদ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘দখলমুক্ত’ করা হচ্ছে না। কোনো হকারকেই একেবারে তুলে দেওয়া হচ্ছে না। মূল রাস্তা ছেড়ে তাঁদের নির্দিষ্ট জায়গায় বসার জন্য বলা হচ্ছে। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, হকারদের বিগত দু’বছর ধরে বলা হচ্ছে, মূল রাস্তা ছেড়ে বসার কথা। তাঁরা শোনেননি বলেই আজ এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। “প্রথম থেকেই তাঁরা সরকারি নির্দেশ পালন করলে পুলিশ, বুলডোজার রাস্তায় নামাতে হত না!”, মন্তব্য ফিরহাদের।
বেআইনিভাবে সরকারি জমি দখল নিয়েও এদিন মুখ খোলেন মেয়র। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ফিরহাদের ভাষায়, “হাউজিং বোর্ডের চেয়ারম্যান অরূপ বিশ্বাসকে চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। জমি দখল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সক্রিয় হতে বলেছেন। তার জন্য মানুষের সাহায্য দরকার। কিছু অসাধু ব্যক্তি নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য বেআইনিভাবে সরকারি সম্পত্তি ব্যবহার করছেন। সরকারি সম্পত্তি মানেই মানুষের সম্পত্তি কিন্তু তা বলে অসাধু কাজে ব্যবহার করা উচিৎ নয়।” সম্প্রতি ঘটা একাধিক গণপিটুনির ঘটনা আদতে পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতা নয়, মন্তব্য মেয়রের। বউবাজারের গণপিটুনির ঘটনা প্রসঙ্গে এদিন ফিরহাদ বলেন, “গুজবে মানুষ নিজের ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলছেন। আর গুজবকে কেন্দ্র করেই গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে। একটি ফোন হারানোর জন্য একটা মানুষকে খুন হতে হবে? আইন নিজের হাতে নেওয়া একটা মারাত্বক বিষয়। এটা পুলিশের ব্যর্থতা নয়! তার জন্য একটা মাস কাউন্সেলিং দরকার। একটা সভ্য সমাজে এই ধরণের ঘটনা কাম্য নয়।” বেআইনি পার্কিং প্রসঙ্গে এদিন তিনি বলেন, “আধিকারিকদের বলেছি যে আমরা নেটওয়ার্কিং করে দিচ্ছি। তিনটে নেটওয়ার্কিং করে দিচ্ছি জিও, ভিআই এবং এয়ারটেল। যারা ভুঁয়ো এজেন্সির মাধ্যমে টাকা তুলছে সেটা খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে।” বিধাননগরে বেআইনি হোর্ডিং নিয়েও ফিরহাদ বক্তব্য রেখেছেন। তাঁর ভাষায়, “যাদের লাইসেন্স থাকবে তাদের হোর্ডিং থাকবে। কৃষ্ণা চক্রবর্তী বা সব্যসাচী কি বলছেন সেটা আমার দেখার দরকার নেই। আমরা ৪৭টি বেআইনি হোর্ডিং সরিয়ে দিয়েছে।” গঙ্গাপাড় ভাঙনের ফলে যারা বাসস্থান হারাচ্ছেন তাদেরকে বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলেও এদিন জানান মেয়র। কোচবিহারের মাথাভাঙা-২ ব্লকে বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা কমিটির সদস্যাকে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই প্রসঙ্গেও মুখ খুলেছেন ফিরহাদ। বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি বলেন, “বিবস্ত্র করে যদি কোনো মহিলাকে নির্যাতন করা হয় তাহলে সেটি অন্যায় হয়েছে। প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আমরা চাইব বিজেপির এই প্রতিনিধি দল মণিপুরেও যাবে।”