করােনার তৃতীয় ঢেউ সামলানাের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার নবান্নে জরুরি বৈঠকে বসল রাজোর গ্লোবাল অ্যাডভাইসরি বাের্ড এই বৈঠকে যােগ দিতে সুদূর আমেরিকা থেকে এলেন নােবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠকের পরে ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে নােবেলজয়ী জানিয়ে দেন, করােনা চিকিৎসার জন্য দারুণ ব্যবস্থা রয়েছে রাজ্যে।
অক্সিজেনের পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত রয়েছে। টেস্টিং-এর জন্য সন্ত্রকম সুবিধে রয়েছে। গ্রামাঞ্চলেও নানা সুবিধে রয়েছে। প্রাথমিকভাবে করােনা উপসর্গ বােঝার জন্য প্রশিক্ষিত আশাকর্মী, গ্রামীণ ডাক্তাররা রয়েছেন। অভিজিৎবাবু বলেন, শুধু মানুষকে সচেতন থাকতে হবে, সামান্য কিছু উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসক কিংবা এইসব প্রশিক্ষিতদের সঙ্গে যোগাযােগ করতে হবে।
এদিন অভিজিং বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গ্লোবাল অ্যাডভাইসরি বাের্ড তার অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়ে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। অভিজিৎবাবুও অনলাইনে হাজির থেকে আমেরিকা থেকেই বিভিন্ন প্রয়ােজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিন তিনি সরাসরি বৈঠকে উপস্থিত হওয়ার জন্য আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রী। গ্লোবাল অ্যাডভাইসরি বাের্ড তৈরির পর থেকেই অভিজিত্ত্বা বলে আসছেন, দ্রুত রােগ চিহ্নিতকরণ জরুরিষ পরবর্তী পর্যায়ে এসেছে দ্রত টিকাকরণ ব্যবস্থা সম্পন্ন করা। কিন্তু এই পর্যায়ে কেন্দ্র ৱাজ্যকে পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকা পাঠাচ্ছে না।
এই নিয়ে অভিজিৎবাবুর মতামত জানতে চাওয়া হলে, তিনি জানান, কেন্দ্রের হাতে যথেষ্ট টিকা রয়েছে। তার সুষম বন্টনা জরুরি। তবে এই নিয়ে সরাসরি কেন্দ্রকে কোনওরকম আক্রমণ করেননি নােবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। তবে করােনা মােকাবিলায় রাজ্যের হাতে সবরকম পরিকাঠামাে রয়েছে বলেই মনে করছেন অভিজিৎবাবু।
তাঁর মতে কোভিডে বেশিরভাগ মৃত্যুই হয় দেরিতে চিকিত্সার জন্য। তাই এখন থেকে সকন্দ্রে জানা উচিত অসুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে সুস্থ হওয়া যাবে। গতবছরের মতাে এবছরও পুজোর ক্ষেত্রে কোভিড বিধির কড়াকড়ি থাকা উচিত। গত বছর এই বিষয়ে হাইকোর্টও নির্দেশিকা জারি করেছিল। সেই নিয়ন্ত্রণবিধি রাজ্যে অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়েছিল।
এবছরও একইভাবে চলা উচিত বলে মতামত দেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপুল সংখ্যার পরিযায়ী শ্রমিক থাকাকে বাংলার সমস্যা হিসেবেই দেখছেন অভিজিৎ বাবু। তিনি বলেন, রাজ্যের অনেকটা আয় আসে পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে। রাজ্যের বহু মানুষ ভিন রাজ্যে গিয়ে কাজ করেন। কোনও রাজ্য এককভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে পারে না। দেশের অর্থনীতি সফল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের অর্থনীতিও গতি পাবে। এক্ষেত্রে রাজ্যের অর্থনীতিকে আলাদা করে দেখলে হবে না।
তবে অভিজিম্বাবু এদিন বলেন, পশ্চিমবঙ্গের সরকার মানুষকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে। কোভিড়ের কারণে সারা দেশেই অর্থনীতি ধীরে চলছে। এক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গও একই পরিস্থিতির শিকার।
এদিন অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ কিনায়কের কথা শেষ হতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকরা এই রাজ্যে ফিরে এসেছেন। তাদের কাজের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বিনামূল্যে রেশন , চিকিৎসা পরিষেবা, বিভিন্ন ভাতাও দেওয়া হয়েছে।
অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার আগে বলেছিল, দেশের জিডিপি হবে সাড়ে বারাে শতাংশ কিন্তু এখন বলছে, তা সাড়ে নয় শতাংশের বেসি হবে না। তবে আমার ধারণা, সেটা হয় বা সাত শতাংশে গিয়ে ঠেকবে। যদি না আবার কোভিডের ঢেউ আসে।