‘যখন রাজ্যপাল আমার উদ্দেশে কটু কথা বলছিলেন তখন আমি খুব বেশি সমর্থন পাইনি’ , আরজি করের ঘটনায় যখন তোলপাড় বাংলা-সহ গোটা দেশ, তখন মুখ খুললেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনা রাজভবনের প্রাক্তন নির্যাতিতা কর্মী। এক সংবাদমাধমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নির্যাতিতা তরুণী বলেন, ‘দেখে ভাল লাগছে , আরজি করের নির্যাতিতার বিচার চেয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায় নামছেন। ওই তরুণীর পরিবার বিচার পান, আমিও তাই চাই। কিন্তু একই সঙ্গে আমার আক্ষেপ হচ্ছে আমার নিজের কথা ভেবে। আমিও তো নির্যাতনের শিকার। কিন্তু সেই সময় আমার পাশে কেন কেউ থাকেননি ? তখন কেন কেউ ‘রাজভবনের জন্য ন্যায়বিচার চাই ‘ বলে চিৎকার করেনি ?
আরজি করে তরুণী-চিকিৎসকের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার দেশ তথা বিশ্ব। ন্যায়বিচারের দাবিতে প্রতিদিন পথে নেমে হুঙ্কার দিচ্ছেন নাগরিক সমাজ। তাতে সামিল হয়েছেন, ছোট-বড় , ধনী-গরিব , শিক্ষিত-মজদুর সব ক্ষেত্রের মানুষ। নারীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তার দাবিতে সোচ্চার তাঁরা। অথচ এই শহরের বুকেই খোদ রাজভবনে অপর এক মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ হারিয়ে গেছে শহরের কোলাহলের মাঝে। গত মে মাসে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছিলেন রাজভবনের প্রাক্তন অস্থায়ী কর্মী। আজ তাঁর প্রশ্ন , তাঁর জন্য এমন আন্দোলন কেন হতে পারল না? এর জবাব নিজেই খুঁজেছেন। ওই মহিলা কর্মীর আক্ষেপ, ‘ হতে পারে উনি রাজ্যপাল, সাংবিধানিক পদে রয়েছেন। তাই হয়তো ওনার বিরুদ্ধে তদন্তও হল না। কিন্তু আজ আমার মনে হচ্চ্ছে, মানুষ তো সেদিন আমার পাশেও দাঁড়াতে পারত !
গত মে মাসে চাকরিতে স্থায়ীকরণের প্রলোভন দেখিয়ে রাজ্যপাল শ্লীলতাহানি করেছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন রাজভবনের প্রাক্তন মহিলা কর্মী। হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় হয় রাজ্যের রাজনৈতিক মহল। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নির্যাতনের অভিযোগকে তুচ্ছ করে রাজভবনে সেদিনের ঘটনা ফুটেজ দেখানোর বন্দোবস্তও করেন রাজ্যপাল।
বিচার চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন নির্যাতিতা মহিলা। চিঠি পাঠিয়েছেন রাষ্ট্রপতির কাছেও। আরজি কর নিয়ে বাঁধভাঙা আন্দোলনে সামিল তিনিও। তিনিও চান তরুণী- চিকিৎসকের সুবিচার। কিন্তু মানুষ সেদিন তাঁর পাশে দাঁড়ালে তাঁর লড়াইটা হয়তো আরও সহজ হতো – আক্ষেপ তাঁর।