বিধানসভায় ৬ নয়া বিধায়কের শপথগ্রহণ আজ,মুখোমুখি হতে পারেন বোস-মমতা

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ইন্টারনেট।

বিধানসভায় সোমবার মুখোমুখি হতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। অন্তত, একটা সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সোমবার সদ্যনির্বাচিত ৬ জন তৃণমূল বিধায়ককে শপথগ্রহণ করাতে বিধানসভায় আসবেন রাজ্যপাল, এমনটাই জানানো হয়েছে রাজভবনের তরফে।

রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের দ্বন্দ্ব-সংঘাত নতুন কিছু নয়। ইতিপূর্বে প্রাক্তন রাজ্যপাল এবং বর্তমানে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিবাদ সুবিদিত। বর্তমান রাজ্যপালের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে সুসম্পর্ক থাকলেও পরবর্তীতে তা তিক্ত হয়ে যায়। রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ, রাজভবনে শ্লীলতাহানির ঘটনাসহ একাধিক বিষয়ে মতানৈক্য দেখা দেয় দুই পক্ষের মধ্যে। বাড়তে থাকে দূরত্ব।

রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর শেষ দেখা হয়েছিল গত ১৫ আগস্ট। প্রথামাফিক রাজভবনের চা চক্রে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কোনও বাক্যবিনিময় হয়নি। তারপরে দুজনের আবার দেখা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আজ, অর্থাৎ সোমবার।
এর আগে বরানগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভগবানগোলা বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক রেয়াত হোসেনকে শপথগ্রহণের জন্য রাজভবনে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল বোস। ওই দুই বিধায়ক রাজি হননি। তাঁরা দাবি জানিয়েছিলেন, তাঁরা বিধানসভাতে গিয়েই শপথবাক্য পাঠ করবেন। এর জন্য ধরনাতেও বসেন তাঁরা। শেষমেশ তাতে মত দেন রাজ্যপাল। তবে, স্পিকারের পরিবর্তে রাজ্যপালের নির্দেশে তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করান বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার। এই নিয়েও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছিল সরকার পক্ষের অন্দরে।


সম্প্রতি নৈহাটি, সিতাই, মাদারিহাট, হাড়োয়া, মেদিনীপুর এবং তালড্যাংরা বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছে। এই ৬টি আসনেই তৃণমূল কংগ্রেস জয়লাভ করে। ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর নিয়মমাফিক বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালের কাছে চিঠি পাঠান। রাজভবনে চিঠি যায় পরিষদীয় দলের থেকেও। রাজভবন থেকেই প্রত্যুত্তরে জানানো হয়, রাজ্যপাল সোমবার বিধানসভায় সশরীরে উপস্থিত থেকে নবনির্বাচিত ৬ বিধায়ককে শপথগ্রহণ করাবেন।

অভিজ্ঞরা অনেকেই মনে করছেন, বাংলাদেশে ঘটতে থাকা হিংসা-উত্তর পরিস্থিতিতে তিক্ততা বাদ দিয়ে সম্প্রীতির বার্তা দিতেই রাজ্যের দুই প্রাতিষ্ঠানিক প্রধান সাক্ষাতে আসতে চলেছেন। তাঁদের মধ্যে বাক্যালাপ হয় কি না, তার দিকেই তাকিয়ে সবাই।