• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

দরকারে শুভেন্দুর হয়ে প্রচারে নামব, ঘােষণা পিতা শিশিরের 

দরকারে নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী ছেলে শুভেন্দুর হয়ে প্রচারে নামবেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ শিশির অধিকারী।

শুভেন্দু অধিকারী ও শিশির অধিকারী (File Photo: SNS)

দরকারে নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী ছেলে শুভেন্দুর হয়ে প্রচারে নামবেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ শিশির অধিকারী। শনিবার সন্ধ্যায় নন্দীগ্রাম আসনে শুভেন্দু অধিকারীর নাম বিজেপি প্রার্থী হিসেবে ঘােষিত হওয়ার পরে কাঁথির ‘শান্তিকুঞ্জ’ থেকে পিতা শিশির অধিকারী তেমনই জানিয়েছেন পাশাপাশিই বলেছেন, “শুভেন্দু নন্দীগ্রামে বিপুল ভােটে জিতবে। আমার প্রচারে নামার কোনও দকার বলে এখনও পর্যন্ত মনে হচ্ছে না। কিন্তু যদি কোনও দরকার হয়, তা হলে আমি অবশ্যই প্রচারে নামব।” 

তিনি এখনও তৃণমূলের সাংসদ! তাঁর দলের হয়ে নন্দীগ্রামে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তা সত্ত্বেও তিনি কী করে বিরােধী দলের হয়ে প্রচার করবেন? এর উত্তরে শিশির জানান, “উনি (মমতা) এখানে লড়তে এসে মস্ত ভুল করছেন। ভােটের ফল ওঁর পক্ষে যাবে না। আমি আবার বলছি, শুভেন্দু বিপুল ভােটে জিতবে।” 

অশীতিপর রাজনীতিক সম্প্রতি চোখের ছানি অস্ত্রোপচার করিয়েছেন। যে কারণে তিনি এতদিন বিশেষ বাইরে বেরােচ্ছিলেন না। একমাত্র নাতির আব্দারে এলাকায় একটি সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনে গিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। নিজেই বলছেন, “আমার চোখ এখন একেবারে ভাল হয়ে গিয়েছে। নিয়মিত স্নান-টানও করছি। ডাক্তারও বলেছে আমি বেরােতে পারি। ফলে আমার তাে প্রচারে যেতে কোনও অসুবিধা নেই। শুভেন্দুর যদি আমার বাবার সাহায্য দকার হয়, তা হলে বা কোনও দ্বিধা করবে না। এটুকু বলতে পারি।” 

তিনি আরও বলেছেন, “প্রচারে যাবই বলে এখনও মনস্থির করিনি। ছেলেরাও বলেনি যে, আমাকে প্রচারে যেতে হবে। এখনও পর্যন্ত আমি ভিতর থেকে যা খবরাখবর পাচ্ছি, তাতে মনে হচেছ না, শুভেন্দুর জিততে কোনও অসুবিধা হবে। বরং শুনছি ও বিপুল ভােটেই জিতবে। কিন্তু যদি ছেলেরা বলে আমায় দরকার, আমি এক মিনিটও দেরি করব না!” 

শুভেন্দু বিজেপি-তে যােগ দেওয়ার পর শিশিরের অন্য পুত্র। সৌম্যেন্দুও বিজেপি-তে যােগ দেন। আরেক পুত্র দিব্যেন্দু এখনও তৃণমূলে থাকলেও দলের সঙ্গে দিন দিন দূরত্ব বাড়ছে তাঁর। বস্তুত, গত মাসে হলদিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির সরকারি সভামঞ্চেও আমন্ত্রিত ছিলেন দিব্যেন্দু। এলাকার সাংসদ হিসাবে তিনি ওই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। 

দিব্যেন্দুকে নিয়েও রাজ্য রাজনীতিতে ব্যাপক জল্পনা তৈরি হয়েছে। তাঁর সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কার্যকলাপ নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব একেবারেই তুষ্ট নন। তাঁর কথায়, “আমি এখনও তৃণমূলেই আছি। যে ভাষায় আমায় এবং আমার পরিবারকে মাইক বেঁধে অপমান করা হয়েছে, তাতে খারাপ লেগেছে। কিন্তু আমি উল্টে কোনও কটুবাক্য বলিনি। তবে ছেলের পাশে বাবাকে তাে দাঁড়াতেই হবে। সেটা নিয়ে তাে কোনও সংশয় কারও থাকা উচিত নয়।” 

তবে শিশিরের সঙ্গেও ক্রমশ দুরত্ব বাড়াচ্ছে তৃণমূল। তাঁকে ইতিমধ্যেই ছেঁটে ফেলা হয়েছে দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে। ওই সরকারি পদ ছাড়াও শিশিরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদ থেকেও। 

শিশিরের কথায়, “২০০৬ সাল থেকে আমি এই দলটাকে আগলে আগলে রেখেছি। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় আমাদের পরিবারের ভূমিকা সকলে জানে। এখন আমায় আর আমার পরিবারকে অপমান করলে মেদিনীপুরের মানুষ কি তার কোনও জবাব দেনে না? উনি (মমতা) তাে বাইরে থেকে এখানে লড়তে আসছেন। শুভেন্দু তাে মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র।