নবান্নের আপত্তি থাকলেও তিন আইপিএস অফিসারকে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে পােস্টিংয়ের নির্দেশ পাঠাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যার জেরে বৃহস্পতিবার নিজের অফিসিয়াল ট্যুইটারে ক্ষোভের কথা জানিয়ে গর্জে উঠলেন মমতা। তিনটি টুইটে মমতা কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক, অগ্রহণীয় এবং অগণতান্ত্রিক বলে বাখ্যা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কনভয়ের দায়িত্বে থাকা তিন আইপিএস অফিসারকে সেন্ট্রাল ডেপুটেশনে পােস্টিং দিয়ে বৃহস্পতিবার চিঠি পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। প্রেসিডেন্সি রেঞ্জের ডিআজি প্রবীণ ত্রিপাঠীকে এসএসবি অথাৎ সশস্ত্র সীমা বলের দায়িত্বে পাঁচ বছরের জন্য ডেপুটেশনে যেতে বলা হয়েছে।
এডিজি রাজীব মিশ্রকে ইন্দো-টিবেটিয়ান বর্ডার পুলিশের আইজি পদে পাঁচ বছরের ডেপুটেশনে এবং ডায়মন্ড হারবারের পুলিশসুপার ভােলানাথ পাণ্ডেকে ব্যুরাে অফ পুলিশ রিসার্চে তিন বছরে ডেপুটেশনে যেতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রের ওই নির্দেশ আসার পরই রাজ্য সরকার পাল্টা চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, এই তিন পুলিশ অফিসারকে কোনওভাবেই যেতে অনুমতি দেওয়া হবে না।
কেন্দ্রের চিঠি পাওয়ার পরেই এই বিষয়ে তিনটি ট্যুইট করে আপত্তি জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম ট্যুইটে লিখেছেন, রাজ্যের তরফে ‘নাে অবজেকশন’ না দেওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্র যেভাবে সেন্ট্রাল ডেপুটেশনে পাঠানাের নির্দেশ দিচ্ছে, তাকে ক্ষমতার অপব্যবহার ছাড়া আর কিছু বলা যাবে না। এখানে আইপিএস ক্যাডার রুল ১৯৫৪ জরুরি ধারা প্রয়ােগ করে তাদের বদলি করা হচ্ছে, যা অসাংবিধানিক।
দ্বিতীয় ট্যুইটে তিনি লেখেন, এইভাবে রাজ্যের এক্তিয়ারে উদ্দেশ্যপ্রণােদিতভাবে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে সরকারি আধিকারিকদের মনোবল ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। ভােটের আগে এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামােয় আঘাত হানার চেষ্টা, যা মেনে নেওয়া যায় না কোনও ভাবেই। তৃতীয় ট্যুইটে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে এইভাবে ঘুরপথে চালানাের চেষ্টা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। প্রভূত্বকামী এবং অগণতান্ত্রিক শক্তির সামনে বাংলা কোনওদিন মাথা নত করবে না।
প্রসঙ্গত, একুশের নির্বাচনের আগে আমলা ও পুলিশ আধিকারিকদের বার্তা দিতেই কেন্দ্র এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এমনটাই ভাবছেন পর্যবেক্ষক মহল। রাজ্যের আইশৃঙ্খলা নিয়ে বার বার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের বিজেপি নেতারা অভিযােগ করেন। সেই অভিযােগকে গুরুত্ব দিতেই কেন্দ্রের এই আইপিএস বদলের নির্দেশ জারি। আর এই পদক্ষেপের সুত্র ধরে রাজী ও কেন্দ্রের মধ্যে সংঘাত আরও জোরদার হল।