হাসপাতালের ভ্যাট থেকে উদ্ধার ক্ষত-বিক্ষত মৃতদেহ! মাথা, হাত, চোখ, দাঁত সহ একাধিক দেহাংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ভ্যাটের মধ্যেই। ঘটনাটি বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। কোথা থেকে এল এই দেহাংশ? কে বা কারা মৃতদেহ ফেলে গেল ভ্যাটে? তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বৃহস্পতিতে ময়লা পরিষ্কারের সময় ভ্যাটের মধ্যে পড়ে থাকা দেহাংশ দেখতে পান হাসপাতালের কর্মীদেরই একাংশ। সেখানে হাত, চোখ, দাঁত-সহ মানবদেহের একাধিক অঙ্গ পড়েছিল। এরপরেই বিষয়টি হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান ওই কর্মীরা। সংশ্লিষ্ট ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যেও। এ প্রসঙ্গে মেডিকেল কলেজের এমএসভিপি অভিজিৎ সাহার বক্তব্য, ‘এটি একটি মেডিক্যাল কলেজ আর এই ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো শবব্যবচ্ছেদ। নির্দেশিকা অনুযায়ী, শবব্যবচ্ছেদের পর দেহাংশগুলি হলুদ প্যাকেটজাত করে নির্দিষ্ট বিএমডবলিউ অঞ্চলে রাখা হয়। তারপর সেগুলি অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। ওই অঞ্চলেই দেহাংশগুলি রাখা হয়েছিল। ময়লা পরিষ্কারের সময় সেটাই দেখা গিয়েছে।’
তবে, দেহাংশগুলি হলুদ প্যাকেটজাত ছিল না বলেই অভিযোগ। খোলা অবস্থায় হাসপাতালের ভ্যাট থেকে মৃতদেহ মিলতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা প্রশ্নচিহ্নের মুখোমুখি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অভিজিৎ সাহা বলেন, ‘সুপারভাইজারের থেকে এই সংক্রান্ত তথ্য আমি নিয়েছি। দেহাংশগুলি হলুদ প্যাকেটজাত করেই নির্দিষ্ট অঞ্চলে রাখা হয়েছিল। বায়োমেডিক্যাল এজেন্সির তরফ থেকে মৃতদেহ সংগ্রহ করা হয়নি বৃহস্পতিবার। তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের থেকে অনুমতি নিয়ে এই কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন। তারাই হয়তো প্যাকেট খুলেছিলেন, তাই ভ্যাটে মৃতদেহ খোলা অবস্থায় দেখা গিয়েছে।’ বারাসতের এসডিপিও বিদ্যাসাগর অজিঙ্কা অনন্তও এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না, খোঁজ নিয়ে দেখছি।’ তবে হাসপাতালের সাফাই বিভাগের সুপারভাইজার রণজিৎ মুখোপাধ্যায়ের অনুমান, ওই দেহাংশ ডাক্তারি পড়ুয়াদের পরীক্ষায় ব্যবহার করা হয়েছিল। ৩-৪ দিন আগে তা ওই ভ্যাটে ফেলা হয়। সেখান থেকে তা সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়নি। কেন তা সরানো হয়নি, সেই বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাবেন বলেও মন্তব্য করেন রণজিৎ। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।