রাজ্য পুলিশের তৎপরতায় এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর সহযোগিতায় মুর্শিদাবাদ এখন ক্রমশ স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। পুলিশের উদ্যোগে একাধিক জায়গায় শান্তি বৈঠক হয়েছে। অঞ্চলগত এইসব বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন স্থানীয় থানার ওসি এবং ওএসডি (অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি)-রা। মানুষ এবার বাজার করা বা কেনাকাটার জন্য বাইরে বেরোতে শুরু করেছেন। মঙ্গলবার নবর্ষের দিনে খুলেছে বেশ কয়েকটি মিষ্টি ও জামা কাপড়ের দোকান। এদিন সকালে ধুলিয়ান বাজারে বেশ কয়েকটি মিষ্টির দোকান খুলতে দেখা গিয়েছে। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় সংখ্যায় কম হলেও দোকান ঘিরে ক্রেতাদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। এছাড়া এখানে দুটি কাপড়ের দোকান এবং তিনটি ওষুধের দোকানও খুলতে দেখা গিয়েছে।
এদিকে আতঙ্কের পরিবেশ কাটিয়ে ফের খুলতে শুরু করেছে বিড়ি কারখানাগুলিও। সামশেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানে নতুন করে কাজ শুরু করেছেন বিড়ি শ্রমিকরা। অশান্তি এড়াতে এবং নতুন করে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে না হয়, সেজন্য বুথ স্তরে শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত রবিবার থেকে এই কমিটিগুলির শান্তি বৈঠক শুরু হয়েছে। সোমবারও সেই বৈঠক অব্যাহত রয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন বিভিন্ন সম্প্রদায় ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। কমিটির প্রধান করা হয়েছে স্থানীয় স্তরে সবার গ্রহণযোগ্য কোনও সম্মানীয় ব্যক্তিকে। তাঁদের ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, এলাকায় কোনও অশান্তি গুজব ছড়ালেই তৎক্ষণাৎ তা পুলিশকে খবর দেওয়ার।
প্রসঙ্গত ওয়াকফ আইন নিয়ে উত্তেজনার জেরে গত কয়েকদিন ধরে অশান্ত মুর্শিদাবাদ জেলা। ঘটেছে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা। মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। অনেক জায়গায় দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। আতঙ্কে বাড়ি ছেড়েছিলেন অনেকে। বন্ধ ছিল অধিকাংশ দোকানপাট। এখন মুর্শিদাবাদে নতুন করে কোনও অশান্তি এড়াতে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ানরা হাতে হাত মিলিয়ে যৌথভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
রাজ্য পুলিশের এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার জানিয়েছেন, উস্কানি ও প্ররোচনার ঘটনায় ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে এগোচ্ছে রাজ্য পুলিশ। শান্তি কমিটি তৈরি করে এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা ফেরানোর কাজ চলছে বলেও জানান তিনি। সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি নীলোৎপল পাণ্ডেও জানিয়েছেন, বিএসএফ ধৈর্যশীল রয়েছে। তবে কোনও ধরনের প্ররোচনা বরদাস্ত করা হবে না বলেও তিনি সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, উপদ্রুত এলাকাগুলিতে শান্তি ফেরানোই বাহিনীর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।