রাজ্যে পুলিশে ৪৩ হাজারেরও বেশি শূন্যপদ

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

পুরভােট কড়া নাড়ছে দরজায়। অন্যদিকে নির্ধারিত সময় বিধানসভা নির্বাচন হলে হাতে রয়েছে বছরখানেকের বেশি সময়। পুলিশের ওপর কাজের চাপ ক্রমশ বাড়ছে। নতুন নতুন পুলিশ জেলা তৈরি হয়েছে। গঠন করা হয়েছে বেশ কয়েকটি কমিশনারেট। তৈরি করা হয়েছে মহিলা থানাও। নিয়ােগ হয়েছে সিভিক ভলেন্টিয়ার। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে নতুন ৮টি পুলিশ জেলা তৈরি হয়েছে। এগুলি হল নদিয়া পুলিশ জেলাকে ভাগ করে রানাঘাট ও কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলা, বারাসত পুলিশ জেলাকে ভাগ করে বারাসত ও বনগাঁ পুলিশ জেলা, উত্তর দিনাজপুর পুলিশ জেলাকে ভাগ করে রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর পুলিশ জেলা এবং মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলাকে ভেঙে মুর্শিদাবাদ এবং জঙ্গিপুর পুলিশ জেলা তৈরি হয়েছে।

সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অধীন আরও ৬টি নতুন থানা তৈরি হয়েছে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অধীনে নিউটাউন, ইকোপার্ক থানা, এবং টেকনাে সিটি থানা। বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের অধীনে রহড়া থানা এবং ভাটপাড়া থানা। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার অধীন পূজালি থানা এবং মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার অধীন সাগরপাড়া থানা। ২০১১-এর পর থেকে আজ পর্যন্ত এই ৬টি নতুন থানাকে নিয়ে ১৫৯টি নতুন থানা তৈরি হয়েছে। যার মধ্যে মহিলা পুলিশ থানা হয়েছে ৪৮টি।

পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামের জন্য দুটি স্পেশাল ট্রেন্ড আর্মড ব্যাটেলিয়ান তৈরি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অধীনে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও অপরাধমূলক কাজকর্মের দ্রুত তদন্তে কলকাতায় অবস্থিত ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির অধীনে আলাদাভাবে ক্রাইম সিন ম্যানেজমেন্ট ডিভিশন গঠন করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। নারকোটিক ডিভিশন চালু হয়েছে আলাদাভাবে। কলকাতা, সল্টলেক ও হাওড়ায় উল্লেখযােগ্য অপরাধের তদন্তে গতি আনতে মােবাইল ফরেন্সিক ইউনিট গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও কলকাতা ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটারিতে ডিএনএ পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজের জন্য প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।


স্বাভাবিকভাবে পুলিশের উপর কাজের চাপ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে গিয়েছে। যােগাযােগ ব্যবস্থা ও প্রযুক্তির উন্নয়ন পুলিশের কাজে যেমন সহায়ক হয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে অপরাধের গতিপ্রকৃতিও পল্টেছে। ফলে পুলিশেও এখন দক্ষ কর্মী ও আধিকারিকের প্রয়ােজনীয়তা বাড়ছে। এমনই এক পরিস্থিতির ওপর দাঁড়িয়ে রাজ্যপুলিশে শূন্যপদে নিয়ােগ হােক এমনটাই চাইছে পুলিশেরই একাংশ।

শুধু অপরাধমূলক তদন্তই নয়, বিভিন্ন সভা সমাবেশ, সেই সঙ্গে উৎসবের দিনগুলিতেও পুলিশের কাজের চাপ অন্যদিনের চেয়ে বহুগুণ বেড়ে যায়। শারীরিক পরিশ্রমের পাশাপাশি মানসিক পরিশ্রমও পুলিশের যথেষ্ট। বর্তমান অবস্থায় দাঁড়িয়ে রাজ্য পুলিশে সব মিলিয়ে ১ লক্ষ ১০ হাজার ৩৯টি অনুমােদিত পদ রয়েছে। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ৬৬ হাজার ৭৬৯ জন পুলিশ কর্মরত রয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ৪৩ হাজার ২৭০টি শূন্য পদ রয়েছে। পুলিশের বিভিন্ন শ্রেণিতে এই পদগুলি শূন্য রয়েছে। যেমন লেডি ইন্সপেক্টরের জন্য ৪৪টি পদ রয়েছে, কিন্তু বর্তমানে সেখানে ২৪ জন কাজ করছে। ২০টি পদ শূন্য রয়েছে। ঠিক একইভাবে সাব-ইন্সপেক্টর (ইউবি) ডাইরেক্ট পদ রয়েছে ৩০২৮টি। কিন্তু এখানে বর্তমানে কর্মরত ১৯৯৭ জন। ১০৩১টি পদ শূন্য রয়েছে। একইভাবে সাব ইন্সপেক্টর (ইউবি) ডিপার্টমেন্টে অনুমােদিত পদের সংখ্যা ৩০২৮ এখানে ১২৪টি পদ শূন্য রয়েছে। ঠিক এভাবেই এসপি পদমর্যাদার নীচে রাজ্য পুলিশে ৪৩ হাজার ২৭০টি পদ ফাঁকা রয়েছে। কবে এই পদে নবান্ন নিয়ােগ করে সেদিকে তাকিয়ে পুলিশ মহল।