• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

এক নিমেষে টাকা ডবল! বর্ধমানে চক্রের ২ পান্ডা গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমান, ২৩ জুন: টাকা দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ করে দেওয়ার নাম করে দিনের পর দিন চলছিল প্রতারণা। বহু মানুষের কাছে থেকে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস হল শহর বর্ধমানে। বর্ধমান থানায় পুলিশের জালে ধরা পড়ল প্রতারণা চক্রের দুই পান্ডা। আটক ধৃতদের মধ্যে একজনের নাম গোপাল সিং। তার বাড়ি বর্ধমান শহরের কালনা রোডের খালাশিপাড়া

নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমান, ২৩ জুন: টাকা দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ করে দেওয়ার নাম করে দিনের পর দিন চলছিল প্রতারণা। বহু মানুষের কাছে থেকে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস হল শহর বর্ধমানে। বর্ধমান থানায় পুলিশের জালে ধরা পড়ল প্রতারণা চক্রের দুই পান্ডা। আটক ধৃতদের মধ্যে একজনের নাম গোপাল সিং। তার বাড়ি বর্ধমান শহরের কালনা রোডের খালাশিপাড়া এলাকায়। আর অন্য জনের নাম সীতারাম পোড়েল। তাঁর বাড়ি রায়না থানার মুক্তারপাড়া এলাকায় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। একটি গোপন সূত্রে পেয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। বর্ধমান শহরে অনিতা সিনেমা লেনের একটি অভিজাত হোটেলের তিনতলার ঘর থেকে প্রতারণা চক্রের এই দুই পান্ডাকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ জানিয়েছে, হোটেলের ঘরে প্রতারকদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি আয়োডিন ও হাইপো কেমিক্যালের শিশি, পাঁচশো টাকার নোটের সাইজের কালো কাগজের বান্ডিল, প্রচুর সাদা কাগজ, ইনজেকশনের সিরিঞ্জ, সুতলি দড়ি, রুমের বিছানার চাদর সহ আরও বেশ কিছু সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অন্য একটি সূত্রে জানা যায়, তাঁদের কাছে নাকি টাকা ছাপার মেশিন পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা তাঁদের দোষ স্বীকার করে নিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃত গোপাল সিং বছরখানেক আগেও শহরের খাগড়াগড়, মাঠপাড়া এলাকা থেকে টাকা জাল করার অপরাধে গ্রেফতার হয়েছিল। সেই সময় তার কাছ থেকে বিদেশি মুদ্রা নকল করার কিছু সামগ্রীও বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিশ।

গোপন সূত্রে পুলিশ খবর পায়, বর্ধমান শহরের অনিতা সিনেমা হলের গলিতে একটি হোটেলের তিনতলার ঘরে টাকা দ্বিগুণ করে দেওয়ার নামে একটি প্রতারণা চক্রের লোকজন জড়ো হয়েছে। এরপরই পুলিশ খদ্দের সেজে সেখানে হাজির হয়। সিগন্যাল পেতেই হোটেলের ঘরে ঢুকে ঘিরে ফেলে প্রতারকদের। তদন্তে জানা গিয়েছে, প্রথমে প্রতারকরা খদ্দেরদের বোঝাতো যে, তাদের কাছে যে কোনও পরিমাণ টাকা নিয়ে আসলেই তারা সেই টাকা দ্বিগুণ করে ফেরত দিতে পারে। এরপর প্রাথমিকভাবে একটি বিশেষ কৌশল ফেঁদে ওই খদ্দেরের সামনেই দু’ধরনের তরল কেমিক্যাল ( আয়োডিন ও হাইপো ) ব্যবহার করে একটি পাঁচশো টাকার নোটকে দুটো করে দেখিয়ে দিত।

এরজন্য প্রতারকরা পাঁচশ টাকার নোটের সাইজের প্রচুর সাদা কাগজ কেটে রেখেছিল। সেই কাগজের টুকরো কেমিক্যালের তরলে ( আয়োডিন ) ডুবিয়ে আসল পাঁচশো টাকার একটি নোটকে একসাথে মিশিয়ে অন্য একটি বড় সাদা কাগজে মুড়িয়ে সুতো দিয়ে বেঁধে দিত। পরে একটি কাগজে আগুন জ্বালিয়ে সেই মোড়ানো কাগজের টুকরোকে তাতে সেঁকে নিয়ে হাইপো কেমিক্যাল দিয়ে ধুয়ে নিত। আর এই কায়দায় খদ্দেরের চোখে ধুলো দিয়ে একটা নোটকে দুটো নোট দেখিয়ে খদ্দেরকে বোকা বানাচ্ছিল প্রতারকরা। পরে এই কায়দায় লক্ষ লক্ষ টাকা দ্বিগুণ বা তিনগুণ করে নেওয়ার মোহে পরে সর্বশান্ত হচ্ছিল মানুষ। এবার বর্ধমান থানার পুলিশের তৎপরতায় প্রতারকদের পর্দা ফাঁস হয়ে গেল।