করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পশ্চিমবঙ্গসহ দশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আজ বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই মুহূর্তে যে কয়েকটি রাজ্যে করোনার সংত্রমণ বেড়েই চলেছে তার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এই রাজ্যে করোনার সংক্রমণ প্রায় এক লক্ষ ছুঁই ছুঁই। এই অবস্থায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার সকাল এগারোটায় ভিডিও কনফারেন্স শুরু হবে। বৈঠকে স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ মুখ্যমন্ত্রীদের সামনে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরবেন। এছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন ক্যাবিনেট সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, নীতি আয়োগের সদস্য বিনোদ পল, ইসিএমআর-এর ডিরেক্টর জেনারেল প্রমুখ।
মূলত যে সব রাজ্যে দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে সেই সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন মোদি। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া এই তালিকায় রয়েছে মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, পাঞ্জাব, গুজরাত, বিহার, উত্তরপ্রদেশ। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীদের পাশাপাশি মুখ্যসচিবদেরও থাকতে বলা হয়েছে। রবিবার রাতেই প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে দশ রাজ্যের মুখ্যসচিবদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এর আগে আনলক পর্ব শুরু হওয়ার পরে গত ১৬ এবং ১৭ জুন মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সেই বৈঠকে বক্তব্য রাখার সুযোগ না থাকায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা রাজ্য প্রশাসনের তরফে কেউই উপস্থিত ছিলেন না। তবে নবান্ন সূত্রে খবর, আজকের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকবেন।
দাক্ষিণাত্যের দেশগুলিতে করোনা ক্রমশ বাড়তে থাকায় উদ্বেগ বাড়ছে। সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা এবং উত্তর চব্বিশ পরগণায় উর্ধ্বমুখী সংক্রমণও চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে করোনা সংক্রমণ রুখতে ক্রমাগত লকডাউন ঘোষণার জন্য মার খাচ্ছে অর্থনীতি। তা সত্ত্বেও কেন্দ্র লকডাইনের পথে হাঁটা যাবে কিনা এই বিষয়ে উর্ধ্বমুখী সংক্রমণের রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলে নিতে চায় মোদি সরকার। কোন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে কী ভাবছেন সেকথা সরাসরি শুনতে চান প্রধানমন্ত্রী। দশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য এটাই।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে আজকের বৈঠকে টানা লকডাউনের বিপক্ষেই মত দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়। বিকল্পে সপ্তাহে দু’দিন করে লকডাউন করে করোনা নিয়ন্ত্রণের পক্ষপাতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজকের বৈঠকে লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো চালানো নিয়ে রাজ্য সরকারের মতামতও জানতে চাওয়া হবে।
ইতিমধ্যেই সংক্রমণের হার কমে যাওয়ায় দিল্লিতে মেট্রো চালু হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আগেও মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিলেন জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের মেট্রোতে যাতায়াতের ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য। কিন্তু মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র না দেওয়ায় পশ্চিমবঙ্গে চালু হয়নি মেট্রো। আজকের বৈঠকে সেই বিষয়টিও উঠে আসতে পারে আলোচনা পর্বে।