শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে মোদির তুলনা রাজ্যপালের, রাজনৈতিক মহলে শোরগোল 

কলকাতা, ৪ ফেব্রুয়ারি –  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে তুলনা করে রাজনৈতিক মহলে ঝড় তুললেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। আনন্দ বোসের দাবি, মহাভারতে অর্জুনের রথ যেভাবে অক্ষত রেখেছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, ঠিক একইভাবে ভারতকেও রক্ষা করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে রাজ্য রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে যায়।  রাজ্যপালের এহেন মন্তব্যে তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। 

এবার সরাসরি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তুলনা করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ভবানীপুরের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন বলে মহাভারতে অর্জুনের রথ কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। একইরকমভাবে নরেন্দ্র মোদি আছেন বলে ভারতবর্ষের মতো রথও অক্ষত রয়েছে। অযোধ্যায় রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরে শিশুরাও বলছেন যে ভারত আজ সকলকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।’ তাঁর এই মন্তব্যের পর রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনৈতিক মহলে।রাজ্যপালের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সোচ্চার হয় শাসক দল তৃণমূল থেকে রাজ্যের প্রাক্তন শাসক সিপিএম।

তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছিলাম যে ওনার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এবার নিজেই সেটা পরোক্ষে স্বীকার করে নিলেন।’ কুণালের কথায়, “নিজের চেয়ারটা অক্ষত রাখার জন্য রাজ্যপাল অকারণ তেলবাজি করছেন। নিজের কাজটা নিজে করুন। ওনাকে যে বিজেপি পাঠিয়েছে, সে কথা সবাই জানে।”


এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘রাজ্যপালের মুখোশ খুলে গিয়েছে। তিনি প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের পথ অনুসরণ করছেন। আর সেই কারণেই এই ধরনের মন্তব্য করছেন।’

কটাক্ষ ধেয়ে আসে বাম শিবির থেকেও। সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, “পদ ঠিক রাখতে হলে এগুলো করতে হয়। উনি সেটাই করছেন।”

অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘রাজ্যপালকে সন্মতি দেওয়া হোক।’ যদিও বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘এটা নতুন ভারত। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর তা নিয়ে রাজ্যপাল আলোচনা করতেই পারেন। এই নিয়ে এত আলোচনা বা সমালোচনার কোনও বিষয় নেই।’

রাজ্যপালের এই মন্তব্য নিয়ে রীতিমতো চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। উল্লেখ্য, রাজ্য এবং রাজ্যপাল সংঘাত নতুন নয়। এর আগেও একাধিক ইস্যুতে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অযোধ্যায় রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠারও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি । রাজ্যপালের মুখে এমন কথা শুনে শোরগোল তৈরি হয়েছে বাংলার রাজনৈতিক মহলে।