ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে রাজ্যে ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখতে একটি পর্যালোচনা বৈঠক ডাকলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকটি হয় উলুবেড়িয়ার ১ নম্বর বিডিও অফিসের পঞ্চায়েত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনেই এই বৈঠক করেন শোভনবাবু। মূল লক্ষ্য, রাজ্যের একজন কৃষকও যাতে শস্যবীমা প্রকল্পের বাইরে না থাকেন, সেটা খতিয়ে দেখা। এব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের এই প্রকল্পে ক্ষতিপূরণ পেতে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নাম নথিভুক্ত করার সরকারি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শোভনবাবু বলেন, রাজ্যের একজন কৃষকও যাতে বঞ্চিত না হন, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি। সবজি ও অন্যান্য যেসব ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে তিনি হটিকালচারকে নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন রাজ্যের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে থাকার স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তিনি।
এদিনের বৈঠকে এই প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় হাওড়ার ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি বিধানসভাভিত্তিক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে এই প্রকল্পের খোঁজ নেন। মন্ত্রী পুলক রায় জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নামের তালিকা তৈরি করে রাজ্য কৃষিবিমা প্রকল্পে তাঁদের দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। একজন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকও যেন বাদ না পড়েন তা সুনিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও ছিলেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়, বিধায়ক সুকান্ত পাল, ডাঃ নির্মল মাজি, বিদেশ বসু, জেলাশাসক পি দিপাপ প্রিয়া, অতিরিক্ত জেলাশাসক, বিডিও, হাওড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাবেরী দাস, সহ-সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য, জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও প্রশাসনিক কর্তারা। ছিলেন কৃষি দপ্তরের প্রধান সচিব ওঙ্কার সিং মীনা-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে এবং ডিভিসি-র জল ছাড়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা। বন্যা কবলিত হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বিস্তীর্ণ কৃষি জমি। বন্যার জলে হাওড়ার আমতা, উদয়নারায়ণপুর, বাগনান, উলুবেড়িয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রচুর ফসল নষ্ট হয়েছে। কৃষকরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রত্যেককে বাংলা শস্যবিমা প্রকল্পের আওতায় এনে তাঁদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। আগামী ৩০ নভেম্বর এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্তকরণের শেষ দিন।