• facebook
  • twitter
Thursday, 21 November, 2024

লক্ষ্মীপুজোয় বাজার আগুন, পকেটে টান মধ্যবিত্তের

ফল বিক্রেতাদের দাবি, পুজোর সময় থেকেই ফল নিয়ে আসা অনেকটা খরচসাপেক্ষ। সেই কারণেই দাম বেড়েছে। পুজো মিটে যাওয়ার পরে দাম কমবে বলে আশ্বাস দেন সবজি বিক্রেতা থেকে ফল বিক্রেতারা।

উৎসবপ্রিয় বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। পুজো শেষ। এবার পালা কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর। বাড়িতে বাড়িতে বাজছে শাঁখ-উলু-কাঁসর-ঘণ্টা। কিন্তু পুজোর আনন্দের মাঝেও মধ্যবিত্তের পকেটে টান। কারণ লক্ষ্মীপুজোয় বাজার আগুন। সবজি-ফলে হাত দিলেই রীতিমতো ছ্যাঁকা খেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

এ বছর দু’দিন ধরে লক্ষ্মীপুজো। কারও বাড়িতে পুজো বুধবার রাতেই, কারও আবার লক্ষ্মীবারে। মা লক্ষ্মীর পুজোয় ফল-মিষ্টি-সবজি সহ নৈবেদ্য সাজিয়ে দেওয়ার রীতি প্রায় সব বাড়িতেই রয়েছে। পাশাপাশি খিচুড়ি-পায়েস ভোগ তো দেওয়া হয়েই থাকে। কিন্তু পুজোর জোগাড় করতে গিয়েই হিমশিম অবস্থা। আপেল, শশা, বেদানা থেকে ফুলকপি, বাঁধাকপি, কুমড়ো, পটল। সব কিছুর দামই যেন আকাশছোঁয়া। পুজোর কেনাকাটা করতে গিয়ে পকেট ফাঁকা মধ্যবিত্তের।

মঙ্গলবার শহর এবং শহরতলির বাজারগুলিতে ঢুঁ মেরেছিল দৈনিক স্টেটসম্যান। বাজারে প্রতি কেজি আপেলের দাম ২০০-২৪০ টাকা। বেদানা ২৫০-৩০০ প্রতি কেজি, পেয়ারা ৬০-৮০ টাকা প্রতি কেজি। শশাও বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৮০ টাকা কেজিতে। শাঁখ আলু ১০০ টাকা, পানিফল ৭০ টাকা, বাতাবি লেবু ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁঠালি কলা প্রায় ৮০-১০০ টাকা ডজন, নারকেল ৫০-৬০ টাকা, আনারস ১০০ টাকা। অন্যদিকে প্রতিটি ধানের শিষ বিক্রি হচ্ছে ১০-২০ টাকা করে।

ফলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দাম বেড়েছে সবজিও। ফুলকপি, বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৫০-৬০ টাকা করে। পটল ৬০-৮০ টাকা, টম্যাটো ১০০-১২০ টাকা, বেগুন ১৫০-১৭০ টাকা, কাঁচালঙ্কা ২০০-২৫০ টাকা। দাম বেড়েছে আলুরও। চন্দ্রমুখী আলুর দাম ৩৬ টাকা কেজি। অন্যদিকে জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে ৩২ টাকা কেজিতে। ফল-সবজির পাশাপাশি ফুলও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। গাঁদাফুলের মালার দাম কোথাও ২০ টাকা প্রতি পিস, কোথাও আবার ৪০ টাকা। রজনীগন্ধার মালা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৬০ টাকায়। ফলে লক্ষ্মীপুজো করতে কালঘাম ছুটছে গৃহস্থের।

কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো হয় না এমন বাঙালি বাড়ি খুব কমই আছে। সাধ্যমতো মা লক্ষ্মীর পুজোর জোগাড় করে থাকেন বাঙালিরা। কিন্তু ক্রেতাদের কথায়, এ বছর ফল এবং সবজির দাম যেন অনেকটাই বেশি। মানিকতলা বাজারের এক ক্রেতা মৌসুমী দাস জানান, ‘অন্যন্য বছরের তুলনায় এ বছর বাজারদর অনেক বেশি। আলুর দামই যেখানে ৩০ টাকার বেশি, সেখানে অন্যান্য সবজি কিনতে গেলে দু’বার ভাবতে হচ্ছে।’ অন্যদিকে সল্টলেকের ফাল্গুনী বাজারের এক ক্রেতা অরুণাভ আদক জানান, ‘ফাল্গুনী বাজারে সারা বছরই সবজি-ফলের দাম বেশি থাকে। লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে দাম একলাফে অনেকটাই বেড়েছে। আপেল ২৪০ টাকা, বেদানা ২১০ টাকা কেজি, শশা ৫০-৬০ টাকা কেজি, বাতাবি লেবু ৪০ টাকা এবং মুসাম্বি লেবু ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।’

সবজি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বন্যার কারণে বিপুল পরিমাণ সবজির ক্ষতি হওয়ায় এই দাম বৃদ্ধি। তার উপর দুর্গাপুজোতে স্বাভাবিকভাবেই দাম বেড়েছে। এখন আবার লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষেও দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ফল বিক্রেতাদের দাবি, পুজোর সময় থেকেই ফল নিয়ে আসা অনেকটা খরচসাপেক্ষ। সেই কারণেই দাম বেড়েছে। পুজো মিটে যাওয়ার পরে দাম কমবে বলে আশ্বাস দেন সবজি বিক্রেতা থেকে ফল বিক্রেতারা।