মন্দারমণি কাণ্ডে অভিযুক্তদের আড়াল করার অভিযোগ, মমতাকে চিঠি মৃতের স্ত্রী’র

কাঁথি আদালতে ধৃত বান্ধবী তনুশ্রী ও আতাউর।

মন্দারমণির হোটেলে তৃণমূল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় নয়া মোড়। অভিযুক্তদের আড়াল করার অভিযোগ তুলে এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখলেন মৃত তৃণমূল নেতা আবুল নাসারের স্ত্রী তথা আমডাঙার পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুরাইয়া পরভিন। তিনি অভিযোগ তুলেছেন পুলিশের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি তিনি মন্দারমণি থানার ওসিকে সরানোর দাবিও জানান। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
মৃত্যুর চার দিনের মাথায় আবুল নাসারের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পেয়েছে পুলিশ। সেই রিপোর্টে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার তথ্য উঠে এসেছে। যদিও এই রিপোর্ট দেখেই পুলিশের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সুরাইয়া পরভিন। তাঁর দাবি, পুলিশ ইচ্ছা করে আত্মহত্যার তত্ত্ব প্রমাণ করার চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, শনিবার সকালে মন্দারমণির একটি হোটেলের ঘর থেকে আমডাঙার তৃণমূল নেতার দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এই ঘটনায় তাঁর এক বান্ধবী ও এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সুরাইয়ার কথায়, ‘ধৃত যুবতির বাবা এক বার ডান্সারকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছেন। আবুল মারা যাওয়ার পর প্রায় ২০ কোটি টাকার সম্পত্তি হাতানোর সুবিধা হয়ে গিয়েছে ‘মামু’র। মন্দারমণি থানার ওসি তার একটা অংশের টাকা পাবেন বলে কথা হয়েছে। তাই তাঁকে (ধৃত যুবতীর মামা) গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। বার বার অনুরোধ করা হলেও সেই তৃণমূল নেতার ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করছে না পুলিশ।’
জানা গিয়েছে, ওই বান্ধবীর মামার সঙ্গে আবুলের জমি সংক্রান্ত ব্যবসা ছিল বলে জানা গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে একটি জমি নিয়ে আবুলের ঝামেলাও হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। পাশাপাশি এই ঘটনা কোনও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে হয়েছে কি না তা–ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সুরাইয়ার অভিযোগ, তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পিছনে ওই মামু ও তাঁর ভাগ্নির হাত রয়েছে। আর টাকার বিনিময়ে তাঁদের সহযোগিতা করছেন মন্দারমণি থানার ওসি। ওসিকে অপসারণের দাবির পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করার আর্জিও জানান সুরাইয়া।
যদিও সমস্থ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা। পূর্ব মেদিনীপুর ডিএসপি (ডিএনটি) আবনুর হোসেন বলেন, ‘ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে আত্মহত্যার পক্ষে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত চলছে। পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’