স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল খুঁটিয়ে দেখতে শহরের হাসপাতালে সারপ্রাইজ ভিজিট মুখ্যমন্ত্রীর

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (Photo: IANS)

করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় কেবল সতর্কবার্তা দিয়েই ক্ষান্ত হননি মুখ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য পরিষেবার হালহকিকৎ খুঁটিয়ে দেখতে শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে সারপ্রাইজ ভিজিটও দিলেন তিনি। করোনার জন্য আমজনতাকে গৃহবন্দি হওয়া থাকার জন্য আর্জি জানালেও মঙ্গলবার নিজে সরাসরি ঢুঁ মারলেন শহরের হাসপাতাল এবং কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। সরজমিনে খুঁটিয়ে জানলেন করোনা মোকাবিলায় ওইসব হাসপাতাল কতটা প্রস্তুত। খোজ নিলেন সেখানকার ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের শারীরিক কুশলের। নিজের হাতে তুলে দিলেন মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদি। 

মঙ্গলবার দুপুরেই নবান্নের সাংবাদিক সম্মেলনে ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে লকডাউন ঘোষণার পরই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন হাসপাতালে সারপ্রাইজ ভিজিটে যাবেন। এই ঘোষণার কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল কলকাতার নগরপাল অনুজ শর্মাকে সঙ্গে নিয়ে শহরের চার হাসপাতাল এবং একটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পৌছে যান মমতা। 

শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে বিভিন্ন হাসপাতালে সরাসরি হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে নজির গড়লেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমেই যান আর জি কর মেডিকেল কলেজে। সেখানে গিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। নিজেই চিকিৎসকদের হাতে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার তুলে দেন। জানিয়ে দেন আরও সরঞ্জাম দ্রুতই পৌছে দেওয়া হবে আর জি কর হাসপাতালে। 


সেখান থেকে সোজা চলে যান মেডিকেল কলেজে। এই হাসপাতালকে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার করোনাভাইরাস রোগির চিকিৎসার প্রধান সেন্টার হিসেবে তৈরির জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। 

মুখ্যমন্ত্রী সেখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন তাদের কোনও অসুবিধে হচ্ছে কিনা। খোঁজ নেন চিকিৎসক, নার্সদের হাসপাতালের কাছাকাছি হোটেল বা লজে থাকার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে কিনা? এই বিষয়ে রাজ্যের তরফে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। 

মেডিকেল কলেজ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোজা চলে যান এনআরএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে সবরকম পরিষেবা মজুত আছে কিনা খোঁজ নেন। হাসপাতালের ডেপুটি সুপারের কাছে খোঁজ নেন সেখানে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে ভর্তি রোগির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে। 

রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত প্রথম মৃত ব্যক্তির সহকর্মী ভর্তি রয়েছে এই হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে। চিকিৎসকরা জানান, ওই রোগির অবস্থা স্থিতিশীল। 

এরপর এসএসকেএম হাসপাতালেও যান মুখ্যমন্ত্রী। এম আর বাঙ্গুরের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গিয়ে করোনা মোকাবিলায় সেখানকার পরিকাঠামো নিয়ে খোঁজ-খবর নেন। সবশেষে বেলেঘাটা আইডিতে যান মুখ্যমন্ত্রী। যেখানে রাজ্য সরকারের আইসোলেশন সেন্টার রয়েছে। খোঁজ নেন সেখানে ক’টা আইসোলেশন বেড রয়েছে। 

বেলেঘাটা আইডিতে ভর্তি করোনা পজেটিভ রোগিদের চিকিৎসা নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রশ্ন করেন। সেখানকার চিকিৎসক, নার্সদের বলেন, তারা যেন সুস্থ থাকেন। কারণ তাদের শারীরিক কুশলের ওপর রাজ্যের স্বাস্থ্য নির্ভর করছে। বেলেঘাটা আইডির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে নির্দেশ দেন।