• facebook
  • twitter
Monday, 14 April, 2025

রামনবমীর চেয়ে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে মমতার প্রতিবাদে বেশি সাড়া

উল্টোদিকে স্বাস্থ্যবিমার ওপর জিএসটি চাপিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সরকার আগেই সাধারণ মধ্যবিত্ত এবং গরিব মানুষকে নাস্তানাবুদ করে দিয়েছে।

নিজস্ব চিত্র

প্রবীর ঘোষাল

এই জন্যই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! মাটির গন্ধ সর্বদা তাঁর নাকে লেগে আছে। মানুষ কী চাইছে, কী তাদের সমস্যা, সেটা বেঝার ক্ষমতা এদেশে মমতার মতো আর কোনও নেতা-নেত্রীর আছে কিনা সন্দেহ। নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ভারতবর্ষের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী নন, প্রথম প্রতিবাদী জননেত্রী হিসাবে মমতাই সরব হয়েছেন। কেবল মুখের কথা নয়, নিজের দলকে কেন্দ্রীয় সরকারের এই জনবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মাঠে নামারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এমনিতে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে গিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে গরিব মানুষ চিকিৎসাই করাতে পরেন না। সেক্ষেত্রেও মমতা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। রাজ্যে সরকারি চিকিৎসার সিংহভাগ বিনামূল্যে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে মা-মাটি-মানুষের সরকার। ভূ-ভারতে কোনও সাধারণ মানুষ এই সুবিধা পায় না।

উল্টোদিকে স্বাস্থ্যবিমার ওপর জিএসটি চাপিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সরকার আগেই সাধারণ মধ্যবিত্ত এবং গরিব মানুষকে নাস্তানাবুদ করে দিয়েছে। বহু মানুষ স্বাস্থ্যবিমার মোটা অঙ্কের প্রিমিয়াম দিতে পারছে না। অনেকে স্বাস্থ্যবিমা মাঝপথে ছেড়েও দিচ্ছে। কারণ খরচে পেরে উঠছে না। এইরকম পরিস্থিতিতে একটা-দুটো নয়, ৭৪৮টি ওষুধের দুম করে দাম বাড়ানোর অনুমতি দিয়ে দিল দিল্লির সরকার। এইসব ওষুধের মধ্যে অধিকাংশই নিত্যপ্রয়োজনীয় প্যারাসিটামল, সুগার, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে ঘুম, সর্দিকাশির ওষুধও আছে। আর আনুপাতিক হারে দুই থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত ওষুধের দাম বেড়েছে। যা কিনা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। তার ওপর ওষুধে ভেজাল জনমনে বিস্তর সন্দেহের সৃষ্টি করেছে।

কেন্দ্রে বর্তমানে এনডিএ’র বকলমে বিজেপির সরকার। পদ্ম শিবির এখন ব্যস্ত রয়েছে রামনবমী নিয়ে। হিন্দুত্বের তাস খেলে কী করে ২০২৬ সালে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির মাটি শক্ত করা যায়, তারা মত্ত সেই ভাবনাতেই। সাধারণ মানুষের সমস্যা নিয়ে তাদের ভাবার সময় নেই।

আর মমতার অবস্থান ঠিক বিপরীত মেরুতে। ওষুধের দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জোরালো আর্জি জানিয়ে দাবি তুলেছেন, অবিলম্বে নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। কোনও সন্দেহ নেই এই ইস্যুতে দেশ অচিরেই উত্তাল হবে। মমতা দিশা দেখিয়েছেন আন্দোলনের। এই পথেই এগোতে হবে অন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে। সাধারণ মানুষের নাড়ির খবর রাখার ব্যাপারে আবার মমতা প্রমাণ করলেন, তিনি অনন্যা।