শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপেই ডিভিসি’র বিরুদ্ধে অভিযােগ এনে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতিকে ‘ম্যান মেড’ বলে থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার নবান্নে ফিরে এই ‘ম্যান মেড’ বন্যার প্রসঙ্গ নিয়ে সবিস্তারে মােদিকে চিঠিও পাঠালেন মমতা।
সেই চিঠিতে আগামী দিনে বন্যা পরিস্থিতি রুখতে দীর্ঘমেয়াদি সুরাহার দাবি জানালেন মমতা। সেইসঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং ‘ম্যান মেড’ বন্যা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের কাজ থেকে পর্যাপ্ত আর্থিক সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযােগও জানানাে হল।
বুধবার রাজ্যের প্রফে যে দীর্ঘ চিঠি পাঠানাে হয়েছে কেন্দ্রকে সেখানে লেখা হয়েছে, ডিভিসি’র ইচ্ছেমতাে জল ছাড়ার কারণেই ২০১৫, ২০১৭, ২০১৯ সালের পর আবার এই বছর রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হল।
নিম্নচাপের কারণে গত কয়েকদিন ধরেই পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডে টানা বৃষ্টি হয়ে চলেছে। সেই সঙ্গে এই সময়কালের মধ্যেই মাইথন, পাঞ্চেত ও তেনুঘাট জলাধার থেকে প্রায় ২ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি।
যার জেরে রাজ্যের হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে রাজ্যের তরফে।
প্রাণহানি হয়েছে ১৬ জনের, লক্ষ লক্ষ মানুসের জীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। ২০১৫ সালে বন্যার সময়েও মােদির কাছে ডিভিসি’র সংস্কার ও তার জল ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি , পলি পরিষ্কার ইত্যাদির আবেদন করা হয়েছিল। এদিনের চিঠিতে পুরনাে চিঠির প্রসঙ্গটিও উল্লেখ করা হয়েছে।
পলি পরিষ্কার করে পাঞ্চেত জলাধারের জল ধারণ ক্ষমতা ১০ কোটি কিউবিক মিটার এবং মাইথন বাঁধে একটি গােলাকৃতি। জলাধার তৈরি করে জল ধারণ ক্ষমতা ১২ কোটি কিউবিক মিটার বাড়ানাের আবেদন সেই সময়ে করা হয়েছিল রাজ্যের তরফে।
সেই সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের বালপাহাড়ির কাছে ষষ্ঠ বাঁধ নির্মাণেরও দাবি জানানাে হয়েছিল। পুরনাে এই দাবিদাওয়াগুলি এদিনের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এর পরেও কেন্দ্রের রফে বিষয়গুলি। সুরাহার জন্য কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে এদিনের চিঠিতে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মমতা।
এদিনের চিঠিতে ডিভিসির জলাধারে দীর্ঘদিন ধরে পলি পড়া এবং রক্ষণাবেক্ষণের গাফিলতির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, একদিকে জলাধারের জলধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বৃষ্টি হলেও যথেচ্ছভাবে জল ছাড়া হচ্ছে।
এরপর বঙ্গোপসাগরে ঘন ঘন নিম্নচাপ ও লাগাতার বর্ষণ ঘটছে। সব মিলিয়ে রাজ্যে প্রায় প্রতি বছর বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। তাই এই বিষয়ে স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী। নরেন্দ্র মােদিকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।