তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী পদের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা একটা রুটিন কাজ হয়ে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেইসব চিঠিতে সমস্যার কথাই শুধু থাকছে না, থাকছে কেন্দ্রের কোভিড নীতির সমালােচনাও। সেই সঙ্গে সমাধানের বিকল্প পথও বাতলে দিচ্ছেন মমতা। বুধবারের চিঠিতেই রাজ্যে ভ্যাকসিন হাব তৈরির জন্য জমি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুক্ৰবার ফের অক্সিজেন প্ল্যান্ট বানানাের পরিকাঠামাে গড়ার অনুমােদন চাইলেন কেন্দ্রের কাছে। বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, রাজ্যে অক্সিজেনের ঘাের সংকটে কেন্দ্রের যােগানের ব্যর্থতাকে তিনি নিজ উদ্যোগেই মেটাতে চান।
এদিনের চিঠিতে মমতা লিখেছেন, রাজ্য সরকার চাইছে ৭০ টি পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি করতে। এজন্য যাবতীয় পরিকাঠামাে নির্মাণের ব্যয়ভার সামলাতে প্রস্তুত রাজ্য সরকার। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের মঞ্জুরি মিলছে না।
প্রসঙ্গত, রাজ্য চাইলেই তার ইচ্ছেমতাে অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি করতে পারে না। মেডিকেল অক্সিজেন তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড়পত্র লাগে। কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন রাজ্যে পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসাচ্ছে ডিআরডিও, এনআরএইচআই-এর মাধ্যমে।
কিন্তু বাংলার কোটা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মমতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিকে লেখা চিঠিতে দাবি করেছেন, রাজ্যে মােট সত্তরটি প্ল্যান্ট বসানাের কথা হলেও এখন মাত্র চারটি প্ল্যান্ট বানানাের অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র।
মমতা এদিন চিঠিতেই স্পষ্ট করে লিখেছেন, দিল্লির সিদ্ধান্তহীনতার জন্যই বাংলায় এই অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি করা যাচ্ছে না। মমতার বক্তব্য, রাজকোষের সামর্থ অনুযায়ী রাজ্যের এজেন্সিই এই প্ল্যান্ট গুলি তৈরি করতে পারে।
কিন্তু কেন্দ্রের সিদ্ধান্তহীনতার জন্যই তা করা যাচ্ছে না। রাজ্যে অক্সিজেন সংকটের কথা আরও একবার কেন্দ্রকে স্মরণ করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এক সপ্তাহ আগেও রাজ্যের অক্সিজেন সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিকে চিঠি দিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেখানে মমতা লিখেছিলেন, বাংলায় করােনা পরিস্থিতিতে অক্সিজেনের চাহিদা বাড়ছে। বাংলায় যে পরিমাণ অক্সিজেন উৎপাদিত হচ্ছে, তা অন্য রাজ্যে পাঠানাে হচ্ছে। বর্তমানে বাংলায় রােজ ৫৮০ মেট্রিক টন অক্সিজেন প্রয়ােজন, সেখানে মাত্র ৩০৮ মেট্রিক টন অক্সিজেন মিলছে।
অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানাে ছাড়াও রাজ্যবাসীর বিনামূল্যে টিকাকরণের জন্য টিকাও কিনতে চেয়েছিলেন মমতা। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি। শুক্রবারের চিঠিতে আবারও অক্সিজেন, টিকা, রেমডিসিভির, টোসিলিজুমারের মতাে করােনার বিরুদ্ধে জীবনদায়ী ওষুধের যােগান বাড়ানাের জন্য আর্জি জানিয়েছেন মমতা।