করোনা লকডাউনে ভিনরাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকদের জন্য উদ্বিগ্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে বাংলার ওই শ্রমিকদের খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রয় ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার আর্জি জানিয়ে ১৮’টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মমতা।
যেসব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের কাছে চিঠি পাঠানো হল তারা হলেন তামিলনাড়ুর ইদাপ্পাদি কে পালানিস্বামী, ওড়িশার নবীন পট্টনায়েক, তেলেঙ্গানার কে চন্দ্রশেখর রাও, কর্ণাটকের বি এস ইয়েদুরাপ্পা, মহারাষ্ট্রের উদ্ধব ঠাকরে, কেরলের পিনারাই বিজয়ন, হিমাচল প্রদেশের জয়রাম ঠাকুর, পাঞ্জাবের অমরিন্দর সিং, উত্তরাখণ্ডের ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত, দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সোরেন, রাজস্থানের অশোক গেহলট, বিহারের নীতিশ কুমার, গোয়র প্রমোণ সাওয়ান্তু, গুজরাতের বিজয় রূপানি, ছত্তিশগড়ের ভূপেশ বাঘেল, অন্ধ্রপ্রদেশের ওয়াই এস জগমোহন রেড্ডি, উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ।
বৃহস্পতিবার এই চিঠির কথা জানানো হয় নবান্ন থেকে। রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে এই সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে তাদের রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের আটকে পড়া শ্রমিকরা যাতে নিরাপদে ও নিরুপদ্রবে থাকতে পারে, সেজন্য চিঠি দিলেন মমতা।
চিঠিতে তিনি লেখেন, আপনাদের রাজ্যগুলিতে বাংলার শ্রমিকরা আটকে রয়েছেন। প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই পঞ্চাশ থেকে একশ জনের মতো শ্রমিক গ্রুপ করে থাকেন। এই পরিস্থিতিতে তাদের আমাদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনার কোনও উপায় নেই। স্থানীয় প্রশাসন চাইলে তাদেরকে চিহ্নিত করতে পারে। এরপর তারা যাতে নিরাপদ আশ্রয়, পর্যাপ্ত খাওয়ার এবং প্রয়োজনমতো ওষুধ পান, সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানিয়েছেন। অত্যাবশকীয় পণ্য পরিষেবা থেকে যেন তাদেরকে বঞ্চিত না করা হয়, সেজন্য আর্জি জানিয়েছেন মমতা।
তিনি জানিয়েছেন এইসব শ্রমিকদের সনাক্তকরণে যাতে অসুবিধে না হয়, সেজন্য এই রাজ্যের মুখ্যসচিব ওই সমস্ত রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরে বিস্তারিত চিঠি দেবেন। লকডাউনের পর দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের কাছে থেকে ফোন এসেছে রাজ্যের কাছে। জানা গিয়েছে হাওড়ার ডোমজুড়ের বহু শ্রমিক আটকে রয়েছেন দিল্লি এবং মুম্বইতে। সোনার গয়না বা জরি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হাওড়ার বহু শ্রমিক রয়েছেন মুম্বই, থানের মতো জায়গায়। তেমনই মুর্শিদাবাদ, মালদহ, পূর্ব বর্ধৰ্মান, হুগলির বহু নির্মাণ শ্রমিক আটকে রয়েছেন পাঞ্জাব, তালিমনাড়ু, কেরলের মতো রাজ্যে।
দিনকয়েক আগে জানা গিয়েছিল কাটোয়ার প্রায় পঞ্চাশজন শ্রমিক কেরলে আটকে পড়েছেন। কলকাতায় আসার জন্য তাদের কাছ থেকে একলক্ষ টাকা করে বাসভাড়া চাওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বাড়ি ফেরানোর জন্য কাতর আবেদন জানিয়েছিলেন আটকে পড়া শ্রমিকরা। উৎকণ্ঠায় ভিন রাজ্যে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। তাদের জন্যই চিন্তিত হয়ে আঠোরটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি পাঠালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।