দু’কোটি মানুষ কেন, দুজন মানুষের গায়ে হাত দিয়ে দেখাক। আমি বেঁচে থাকতে বাংলায় নাগরিকপঞ্জি চালু করতে দেব না। বাংলায় বিজেপি এই প্রচেষ্টা চালাতে গেলে তার ফল ভালাে হবে না। বৃহস্পতিবার এনআরসি নিয়ে এক প্রতিবাদ সভায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে এইভাবেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এনআরসির নাম করে যেভাবে ফের দেশভাগের চক্রান্ত শুরু হয়েছে তার বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলনের কথাও জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমাে। শুক্রবার এনআরসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে উত্তর কলকাতা তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে আয়ােজিত এক পদযাত্রায় শামিল হন মুখ্যমন্ত্রী। সিঁথি মােড় থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত প্রায় ৪.৬ কিলােমিটার এই পদযাত্রায় তৃণমূলের কর্মী ও সমর্থকদের ভিড় উপচে পড়ে। বিকালে এক জনসভায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে সমালােচনায় মুখর হন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, আমি বেঁচে থাকতে রাজ্যে এনআরসি হতে দেব না। বাংলায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ঝগড়া বাধানাের চেষ্টা হচ্ছে। আমি আগামী প্রজন্মকে তৈরি করে যাচ্ছি, যাতে ভবিষ্যতে কেউ বাংলায় এনআরসি চালু করতে না পারে।
মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা, এই লড়াই হল আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। তার প্রশ্ন, কেন স্বাধীন ভারত আবার পরাধীন হবে? আরও একবার দেশভাগের চক্রান্ত আমরা মেনে নেব না একথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি বলছি আরও একবার বাংলা ভাগের চেষ্টা করবেন না। আমি বেঁচে থাকতে তা হতে দেবনা। আবার ওঁম শব্দের মানে বােঝানাে হচ্ছে। এই শব্দের মানে বােঝানাের চেষ্টা করবেন না বলেও তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্বকে।
উল্লেখ্য, অসমে চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি থেকে ১৯ লক্ষ নাগরিকের নাম বাদ পড়েছে। শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি চালু করার কথা বলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষ। এনআরসি চালু হলে দুকোটি বাংলাদেশীর নাম বাদ যাবে বলে বিজেপি নেতারা জানিয়েছেন।
তাঁদের বক্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এনআরসি নিয়ে এখন ভাগাভাগির রাজনীতি হচ্ছে। এনআরসিতে অসমে বহু হিন্দু, গােখা এবং মুসলিমের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। বাংলাতেও এনআরসি চাল করার নামে ফের এই রাজ্যকে ভাগ করার : চক্রান্ত শুরু হয়েছে।
বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তৃণমূল সুপ্রিমাের হুঁশিয়ারি, বাংলা ভাগের চেষ্টা হলে আমরা রুখে দাঁড়াব। অসমে পুলিশ দিয়ে মানুষকে ভয় দেখিয়ে এনআরসি করা হয়েছে। তবে অসমে হলেও বাংলাতে করা যাবে না। আন্দোলনের মধ্য দিয়েই সমস্ত কিছুর জবাব দেব বলে জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমমা।