‘বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিন’, পাহাড়-সফরে দাবি মমতার

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: এএনআই।

রাজ্যের ছয় কেন্দ্রের উপনির্বাচনের মুখে সোমবার ফের পাহাড়-সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। উত্তরের পথে রওনার পূর্বেই কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে আগামী উপনির্বাচনের জন্য ভোট-প্রার্থনা শ্রুতিগোচর হলো মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে। পাশাপাশি এদিন কড়া ভাষায় বিজেপিকে আক্রমণ না করলেও বিজেপি-বিরুদ্ধাচারণ করতে পিছু হঠলেন না মুখ্যমন্ত্রী। মহারাষ্ট্রে আসন্ন নির্বাচন। এই নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘অন্য কোনও রাজ্যের বিষয়ে কোনও টিপ্পনী কাটতে চাই না। নির্বাচনের আগে এ রকম মন্তব্য করা উচিতও নয়। তবে নিশ্চয়ই চাইব, মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিন।’

 

উল্লেখ্য, সোমেই শেষ নির্বাচনী প্রচার এবং আগামী ১৩ নভেম্বর রাজ্যে উপনির্বাচন। শেষ মুহূর্তের প্রচার-পর্বে বিমানবন্দর চত্বরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিতাইয়ে সঙ্গীতা, মাদারিহাটে জয়প্রকাশ, মেদিনীপুরে সুজয়, নৈহাটিতে সনৎ, হাড়োয়ায় রবিউল এবং তালড্যাংরায় ফাল্গুনী সিংহবাবু লড়ছেন আমাদের দল থেকে। ওঁরা সবাই খেটেছেন। আমি সকল মা-বোনকে বলতে চাই, আমাদের প্রার্থীদের বিপুল ভোটে জয়ী করুন। ৩৬৫ দিনই আমরা আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকবো। এমনিতে আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ যে আপনারা সবসময়ে আমাদের পাশে থেকেছেন, ভরসা রেখেছেন। সংসদীয় নির্বাচনে আমাদের প্রার্থীদের বিপুল ভোটে জিতিয়েছেন, বর্তমানে তাঁরা নিজেদের মতো কাজ করছেন। এবারও আমাদের প্রার্থীদের জয়ী করুন, উন্নয়নের কাজ আরও ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করুন।’


 

এদিন নিজ দার্জিলিং সফর প্রসঙ্গেও সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায়, ‘প্রায় বছর দেড়েক পর দার্জিলিং যাচ্ছি। নানা কারণে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। এমনকী লোকসভা নির্বাচনের সময়ও যেতে পারিনি। মাঝে একবার কার্শিয়ং পর্যন্ত গিয়েছিলাম। ওখানে অনীতরা (অনীত থাপা) সব কাজ করেছেন।’ এরপরই পাহাড়ের উদ্দেশ্যে শান্তি-বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘আমি সর্বদাই চাই দার্জিলিং ভালো থাকুক, তরাই-ডুয়ার্স ভালো থাকুক, চা বাগান ভালো থাকুক। গোর্খা, নেপালি, রাজবংশী, হিন্দু, মুসলিম নির্বিশেষে সকল মানুষ ভালো থাকুন। প্রত্যেককে সকল উৎসবের শুভকামনা জানাচ্ছি।’

 

প্রসঙ্গত, সোম-সকালে কলকাতা থেকে রওনা দিয়ে দুপুরেই বাগডোগরা পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে মঙ্গলবার অর্থাৎ আজ বিকেল সাড়ে ৩টেয় জিটিএ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা তাঁর। পাহাড়ের উন্নয়নে জিটিএ-র সদস্যদের কোনও নতুন নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী দেবেন কি না সেই দিকেও চোখ রয়েছে পাহাড়ের রাজনৈতিক মহলের। এরপর আগামী ১৩ তারিখ, বুধবার দুপুরে দার্জিলিং চৌরাস্তায় সরস মেলার উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। শেষে দু’দিনের পাহাড় সফরে সেরে আগামী ১৪ নভেম্বর শিলিগুড়ি হয়ে কলকাতায় ফিরবেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর কলকাতায় ফিরেই আগামী ১৫ নভেম্বর বিরসা মুন্ডার ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজারহাটে আদিবাসী ভবনে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সফরসঙ্গী রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।