সকালে পাহাড়ের রাস্তায় মমতা, বিকেলে জিটিএ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক

রিচমন্ড হিলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংগৃহীত চিত্র

উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সকালে তাঁকে দার্জিলিঙের রাস্তায় মর্নিং ওয়াক করতে দেখা যায়। মঙ্গলবার দুপুরে দার্জিলিঙে জিটিএ–র সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকের পরই পাহাড়ের উন্নয়নে একগুচ্ছ প্রকল্পের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাহাড়ের প্রতিভাবান ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থানের জন্য সরকারিভাবে বিশেষ পোর্টাল চালুর কথা জানান মমতা। পাশাপাশি এখানকার তরুণ প্রজন্মকে কর্মসংস্থানের উপযোগী করে তুলতে সরকারিভাবে  ৪টি স্কিল সেন্টার চালু করার কথাও ঘোষণা করা হয়। মমতার দাবি, এই সেন্টারে ট্রেনিংয়ের পর সঙ্গে সঙ্গে চাকরি পাওয়া যায়।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ জিটিএ–র সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা । জিটিএ–র পাশাপাশি এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য জনজাতিদের জন্য তৈরি বোর্ডের সদস্যরাও। এই বোর্ডের কাজকর্ম এদিন খতিয়ে দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্প্রতি এই বোর্ডের কাজকর্ম নিয়ে কিছু অভিযোগ সামনে এসেছিল। সেই সম্পর্কেও কথা হয়েছে বৈঠকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পাহাড়ের একাধিক এলাকায় ধস নেমেছিল। কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায়  কী কী কাজ হয়েছে তা এদিন খতিয়ে দেখেন মমতা।
মঙ্গলবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দার্জিলিং ও কালিম্পঙের ডিএম ও এসপি, জিটিএ–র চিফ এগজিকিউটিভ অনিত থাপা, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সহ অন্যান্যরা। এদিনের এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পাহাড়ে অনেক প্রতিভাবান ছেলেমেয়ে রয়েছে। তাঁদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যেই এবার সরকারি পোর্টাল চালু হবে। স্কিল ডেভলপমেন্টের জন্য সরকারিভাবে চারটি সেন্টারও চালু করা হবে।’ এছাড়া তিনি বলেন, ‘রাজবংশী, কামতাপুরী, গোর্খা, পাহাড়ের সকল জনগোষ্ঠী যেন উন্নতির পথে এগিয়ে যেতে পারে, সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে রাজ্য সরকার কাজ করে চলেছে।’ পাহাড়ের উন্নয়ন নিয়ে অনিত থাপার থেকে পরামর্শ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সকল পরামর্শ পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
মমতা এদিন আরও জানান, ক্ষমতায় আসার পর ২০১২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত পাহাড়বাসীদের ৫৫ হাজার পাট্টা বিলি করা হয়েছে।
 সোমবার দুপুরে শিলিগুড়িতে পৌঁছেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় দেড় বছর পর তাঁকে ফের পাহাড়ের রাস্তায় দেখা গেল। মঙ্গলবার সকালে চেনা ছন্দে ধরা দিলেন মমতা।  দার্জিলিঙের বিভিন্ন এলাকায় হেঁটে জনসংযোগ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।  তিনি এদিন সকালে রিচমন্ড হিল থেকে বেরিয়ে হাঁটতে শুরু করেন। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ হাঁটেন মমতা। হাঁটতে হাঁটতে দাঁড়িয়ে কথা বলেন পর্যটকদের সঙ্গে। শোনেন ব্যবসায়ীদের অভাব অভিযোগের কথা।
এদিন সকালে তিনি বিশ্ববাংলার স্টলে ঢুকে পড়েন। পাশাপাশি ঘুরে দেখেন একাধিক শীতের পোশাকের দোকান। এই সকল দোকানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে এভাবে কাছে পেয়ে পাহাড়বাসীরা আনন্দিত। আজ বুধবার দার্জিলিঙের চৌরাস্তায় সরস মেলার উদ্বোধন করবেন মমতা। আগামীকাল তার কলকাতায় ফিরে আসার কথা রয়েছে।