এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে কাওকে চিন্তা না করার আবারও পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিএএ’র বিরােধিতায় রাজ্যের একশ শতাংশ মানুষই তাঁর পাশে রয়েছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
সােমবার শিলিগুড়ি শিবমন্দিরের আঠারখাইতে মুখ্যমন্ত্ৰী উত্তরবঙ্গ উৎসবের উদ্বোধন করতে আসেন। আগামী ক’দিন ধরে তাঁর পাহাড়ে কর্মসূচি রয়েছে। পাহাড়ে তিনি এনআরসি ও সিএএ’র বিরােধিতায় মিছিল করবেন। তারপর দার্জিলিংয়ে নেতাজি জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে তাঁর যােগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
এদিন আঠারখাই শিবমন্দিরে এ রাজ্যের মানুষকে তাদের অধিকার রক্ষায় ভয় না পাওয়ার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাঁচ দিনের উত্তরবঙ্গ সফর এদিন শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এদিন এনআরসি’র বিরােধিতা করে বলেন, এই বাংলার মাটি আমাদের, রাজ্য আমাদের। এই মাটির অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবেনা।
এদিন উত্তরবঙ্গ উৎসবের উদ্বোধন মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি কাওয়াখালিতে জার্নালিস্টস ক্লাবের ভবন উত্তরীয়ার উদ্বোধন করেন রিমােটের সাহায্যে। উৎসব মঞ্চ থেকে উত্তরবঙ্গের আট জেলার নয় জন গুণী মানুষকে বঙ্গরত্ন দেন মুখ্যমন্ত্রী। যাদের তিনি বঙ্গরত্ন দিয়েছেন তাঁরা হলেন, শিলিগুড়ির ভারতী ঘােষ (টেবিল টেনিস প্রশিক্ষক), দার্জিলিংয়ের বডি বিল্ডার গনেশ বাহাদুর গিরি, কোচবিহারের শিক্ষক জ্যোতির্ময় রায়, আলিপুরদুয়ারের শিক্ষক রাজেন্দ্রনাথ দাস, দক্ষিন দিনাজপুরের লেখক বিশ্বনাথ লাহা, জলপাইগুড়ির পদার্থ বিজ্ঞানী শুভম মজুমদার, কালিম্পংয়ের হেমলতা প্রধান, উত্তর দিনাজপুরের শিক্ষক মমতা কুন্ডু। মুখ্যমন্ত্রী বঙ্গরত্ন প্রদান করে বলেন, বাম আমলে উত্তরবঙ্গের বিশিষ্ট গুণীজনরা যােগ্য সম্মান পাচ্ছিলেন না, এখন কিন্তু তা হচ্ছে না। এখন তাদের সম্মান জানাতে বঙ্গরত্ন শুরু করা হয়েছে।
এদিন উত্তরবঙ্গ উৎসবের উদ্বোধন করেই মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বুধবার দার্জিলিং পাহাড়ে গাের্খা জনমুক্তি মাের্চার বিনয় তামাং এবং অনিত থাপা এনআরসি এবং নাগরিকত্ব সংশােধনী আইনের বিরুদ্ধে পাহাড়ে যৌথ প্রতিবাদ মিছিল করবে। তাতেও মুখ্যমন্ত্রী পা মেলাবেন।
বৃহস্পতিবার দার্জিলিংয়ের ম্যালে নেতাজি জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যােগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। একুশ তারিখে মানে মঙ্গলবার পাহাড়ে প্রশাসনিক বৈঠকও হওয়ার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। চব্বিশ তারিখে তাঁর ফিরে যাওয়ার কথা। মুখ্যমন্ত্রী এদিন শিলিগুড়ি শিবমন্দির আঠারখাইতে উত্তরবঙ্গ উৎসবের উদ্বোধন করে বাংলা ভাগের বিরােধিতা করেন। বাংলা ভাগের মদতদাতাদের তিনি হুশিয়ারী দেন। তিনি বলেন, ভাগাভাগির রাজনীতি থেকে বাংলার মানুষকে দূরে রাখতে হবে। এই বাংলাতে গােৰ্খা, কামতাপুরী, রাজবংশী প্রত্যেককে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকতে হবে। বাংলা ভাগের চক্রান্তকারীদের কোনওভাবেই মদত দেবে না রাজ্য সরকার। যারা বাংলা ভাগের চক্রান্ত করবে তাদের কড়া হাতে মােকাবিলা করা হবে।