আদালতের চাপে এসএসসি নিয়ে রাজ্যজুড়ে তুমুল সমলোচনা চলছে। এর মধ্যেই সোমবার বিধানসভায় সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বললেন, লাখখানেক চাকরির মধ্যে ৫০-১০০ টা ভুল কেস থাকতেই পারে। সেগুলো শুধরে নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
এইভাবেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ালেন ‘দিদি’। অন্যদিকে নাম না করে বেনিয়মের দায়ে তিনি নিশানা করলেন, ‘দাদামণি’ শুভেন্দু অধিকারীকে।
স্বজনপোষণ করে রাজ্যে এসএসসি’র মাধ্যমে অনেকের চাকরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন বেনিয়মে অনেকের চাকরি হয়েছে, এই অভিযোগ নিয়ে সিবিআই দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তাঁকে।
এদিন এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতেই সবাই লাফাচ্ছে’।
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘আর দাদামণি যাঁদের চাকরি দিলেন, তাঁদের কী হবে? দাদামণি এবার জবাব দেবেন??
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম দিনাজপুর জেলায় কীসের বিনিময়ে চাকরি হল ‘দাদামণি’ জবাব দেবেন?
এমনকী পুরুলিয়ার চাকরির কোটাও মেদিনীপুরে নিয়ে চলে যাওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ মমতার।
কিন্তু কোনও বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। এইসব জেলার নাম উল্লেখের সূত্রে বোঝা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের নিশানা শুভেন্দুর দিকে।
কারণ তৃণমূলে থাকার সময়ে ওইসব জেলার পর্যবেক্ষক পদে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন বিধানসভায় নাম না করে শুভেন্দুকে নিশানা করে মমতা বলেন, সরকারে যখন থাকবেন, তখন করে খাবেন। আবার বিজেপিতে গিয়েও সুবিধে নেবেন।
সম্প্রতি গেরুয়া শিবিরের বিধায়করা সোস্যাল মিডিয়াসহ চারিদিকে রটিয়ে বেড়াচ্ছে, ১৭ হাজার লোকের চাকরি চলে যাবে।
মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের দিকে তাকিয়ে বলেন, তখন তোমাদের বাড়ির লোকেদেরও চাকরি চলে যাবে।
এরপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় অজান্তেও ভুল হয়ে থাকে। তা সংশোধন করার জন্য সময় দিতে হবে।
কিন্তু তা বলে কারও চাকরি খেয়ে নেওয়া ঠিক নয়। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, বাম আমলেও অনেকের চাকরি নিয়ে বেনিয়ম হয়েছিল।
কিন্তু আমরা কারও চাকরি খেয়ে নিই না। এটা ত্রিপুরা না। যদি আদালত সুযোগ দেয়, তাহলে একজনেরও চাকরি যাবে না।
এইজন্য ইতিমধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজার পদ তৈরি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ওরা আদালতে যায়, লোকের চাকরি দিতে নয়, চাকরি খেতে।
এই পরিসরে এদিন তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে তোপ দেগে বলেন, কেন্দ্র বলেছিল দু’কোটি মানুষের চাকরি দেবে, অথচ ক’জনের চাকরি হয়েছে? বরং দেশে বেকারির সংখ্যা ৪০ শতাংশ বেড়েছে।